করোনা টিকা নিচ্ছেন অরবিন্দ কেজরীবাল। ছবি: পিটিআই
করোনা প্রতিষেধক প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির টিকা তৈরির সম্পূর্ণ ক্ষমতা ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে আজ সংশয় প্রকাশ করল দিল্লি হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আদালত কেন্দ্রের কাছ থেকে জানতে চেয়েছে, কেন ষাটোর্ধ্ব এবং ৪৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সি যাঁদের কো-মর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদেরই শুধু টিকাকরণের জন্য বেছে নেওয়া হল ?
সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্টে টিকাকরণ নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট জানিয়েছে, সেরাম ইনস্টিটিউট কোভিশিল্ড এবং ভারত বায়োটেক কোভ্যাক্সিন তৈরি করছে। আরও বিপুল পরিমাণ প্রতিষেধক তৈরির ক্ষমতা তাদের রয়েছে। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে, ওই দুই সংস্থার পূর্ণ ক্ষমতা ব্যবহার করা হচ্ছে না। বিচারপতি বিপিন সঙ্ঘী এবং বিচারপতি রেখা পল্লির বেঞ্চ কেন্দ্রের উদ্দেশে বলেছে, ‘‘দেশের মানুষের টিকাকরণের জন্য আমরা ওই ক্ষমতা পুরোপুরি ব্যবহার করছি না। আমরা হয় প্রতিষেধক অন্য দেশকে দিচ্ছি বা তাদের বিক্রি করছি। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষকে বোধ হয় ঠিক ভাবে প্রতিষেধক দেওয়া
হচ্ছে না। এ ব্যাপারে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’’
সেরাম ইনস্টিটিউট এবং ভারত বায়োটেককে হাইকোর্টের নির্দেশ, প্রতিদিন, প্রতি সপ্তাহ ও প্রতি মাসে তারা কত প্রতিষেধক তৈরি করতে পারে তা হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। ওই সংস্থা দু’টি তাদের কতটা ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারছে না তা-ও জানাতে বলেছে আদালত।
টিকাকরণের তৃতীয় পর্বে প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে ষাটোর্ধ্বদের এবং ৪৫ বছর থেকে ৫৯ বছর বয়সি যাঁদের কো-মর্বিডিটি রয়েছে। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রের কাছে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছে, কিসের ভিত্তিতে প্রতিষেধক প্রদানে এই ভাগ করা হয়েছে। কেন্দ্রের বক্তব্য হলফনামা দিয়ে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
কোভিড-১৯ চিকিৎসা সংক্রান্ত একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট আজ নির্দেশ দিয়েছে, করোনা আক্রান্ত প্রবীণ নাগরিকদের ভর্তি ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে।
দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি ক্রমশই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দৈনিক সংক্রমণ ১৭ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ১১ জানুয়ারির পর দৈনিক সংক্রমণ এই প্রথম ১৭ হাজারের গণ্ডি পার করল। সংক্রমণ বাড়লেও গত তিন দিন ধরে দৈনিক মৃত্যু ১০০-র নীচে। গত ২৪ ঘণ্টায় যত জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের সাড়ে ৮৫ শতাংশই মহারাষ্ট্র, কেরল, পঞ্জাব, তামিলনাড়ু, গুজরাত ও কর্নাটকের বাসিন্দা।
সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি (সিসিএমবি), ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল টেকনোলজি (আইআইসিটি) এবং ন্যাশনাল জিওফিজিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এনজিআরআই) যৌথ ভাবে গবেষণায় জানিয়েছে, গণ পরিবহণে যাতায়াত করলে পুনরায় সংক্রমণের আশঙ্কা কমে। দেশের ২৪টি শহরের উপরে এই গবেষণা করা হয়েছে।
এ দিকে, আজই প্রথম এক দিনে ১০ লক্ষেরও বেশি ভারতবাসীকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। সন্ধে সাতটা পর্যন্ত দেশের প্রায় ১০ লক্ষ ৯৩ হাজার জন মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য বলছে, এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ৭৭ লক্ষ ভারতবাসী প্রতিষেধক পেয়েছেন।