গঙ্গাধর তিলক কাটনাম এবং তাঁর স্ত্রী বেঙ্কটেশ্বরী। ছবি সৌজন্য টুইটার।
খারাপ রাস্তার কারণে কারও যেন প্রাণহানি না হয়, এই পণ নিয়েই গত ১১ বছর ধরে রাস্তার গর্ত বুজিয়ে চলেছেন হায়দরাবাদের এক বৃদ্ধ দম্পতি। কোনও সরকারি বা ব্যক্তিগত সাহায্য নয়, নিজের পেনশনের টাকা দিয়েই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে রাস্তা সারাই করে চলেছেন ওই বৃদ্ধ। আর এ কাজে বৃদ্ধকে সহযোগিতা করেন তাঁর স্ত্রী।
নাম গঙ্গাধর তিলক কাটনাম। বছর তিয়াত্তরের এই বৃদ্ধ গত ৩৫ বছর ধরে রেলে কাজ করতেন। অবসরের পর হায়দরাবাদে চলে আসেন। তার পর এক জন সফটওয়্যার ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ শুরু করেন।
এক জন প্রাক্তন রেলকর্মী এবং ইঞ্জিনিয়ার হওয়া সত্ত্বেও কী এমন ঘটনা ঘটল যা তাঁকে এই কাজে অনুপ্রাণিত করেছে? তিলক জানান, রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে অনেক সময়ই পথচারীদের দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়েছে। অনেকের প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে বার বার স্থানীয় প্রশাসনের জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি তাঁর। শেষমেশ নিজেই রাস্তা সারাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিলক।
রাস্তায় গর্ত সারাই করছেন কাটনাম দম্পতি।
তাঁর কথায়, “রাস্তায় গর্তের কারণে বহু মানুষকে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে দেখেছি। তাই স্থির করি এমন একটা কিছু করতে হবে যাতে কেই দুর্ঘটনার মুখে না পড়েন, কারও জীবনহানি না হয়।” তাই ইঞ্জিনিয়ারিং ছে়ড়ে এ কাজেই নিজেকে নিয়োজিত করে ফেলেন তিলক। আর এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করেন স্ত্রী বেঙ্কটেশ্বরী। স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মিলে গত ১১ বছরে ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করে হায়দরাবাদ শহরের বিভিন্ন রাস্তার ২,০৩০টি গর্ত সারাই করেছেন।
শহরের কোনও রাস্তাতে গর্ত দেখলেই স্বামী-স্ত্রী গাড়ি নিয়ে সেখানে পৌঁছে যান। তার পর দু’জনে মিলে শুরু করেন সেই গর্ত মেরামতির কাজ। এই কাজের জন্য হায়দরাবাদে কাটনাম দম্পতি ‘রোড ডক্টর’ হিসেবেই পরিচিত। তাঁদের গাড়ির নাম দেওয়া হয়েছে ‘পটহোল অ্যাম্বুল্যান্স’।