পাক শিল্পীদের পাশে দাঁড়ালেন বলিউড অভিনেতা সলমন খান।
বিতর্কের সূত্রপাত কাল রাতে। ভারতীয় প্রযোজক সংস্থা ‘দ্য ইন্ডিয়ান মোশন পিকচার প্রোডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন’ (ইম্পা) প্রস্তাব নিয়েছে, সংস্থার সদস্যরা আপাতত কোনও পাকিস্তানি শিল্পীদের কাজ দেবেন না। অর্থাৎ দিন কয়েক আগে বজরঙ্গ দল বা এমএনএসের মতো রাজনৈতিক দলগুলি যে দাবি তুলে আসছিল, কার্যত তাতেই সিলমোহর দিয়েছে ইম্পা। তার পর থেকে বিতর্কের ঝড় উঠেছে দু’দেশেই।
ইম্পার সভাপতি টিপি অগ্রবাল জানিয়েছেন, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সমর্থনেই এই সিদ্ধান্ত। প্রযোজক অশোক পণ্ডিত বলেন, ‘‘উরির শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে চায় ইম্পা। যত দিন না দু’দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হচ্ছে, পাকিস্তানের অভিনেতা আর প্রযুক্তিবিদদের নিষিদ্ধ করছে ইম্পা।’’
বলিউডের একটা মুখ যদি ইম্পা হয়, অপর মুখটা অবশ্যই সলমন খান। যিনি প্রকাশ্যে পাক শিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সলমনের বক্তব্য, ‘‘পাক শিল্পীরা তো আর সন্ত্রাসবাদী নন। সন্ত্রাসবাদ আর শিল্প দু’টো সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস।’’ তা হলে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক? তাতে অবশ্য পূর্ণ সমর্থন রয়েছে সলমনের। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভারতীয় বাহিনী জঙ্গিদের মেরে ঠিক কাজই করেছে। তবে আমরা তো শিল্পী। আমরা সব সময় শান্তিই চাই।’’ এ কথা বলায় ফেসবুক-টুইটারে আজ সারা দিন তুলোধনা করা হয়েছে তাঁকে। সলমনকে আজ একহাত নিয়েছেন এমএনএস প্রধান রাজ ঠাকরেও। রাজের বক্তব্য, ‘‘সীমান্তে আমাদের জওয়ানরা যে গুলিগুলো খায়, সেগুলো আসল। ফিল্মি নয়।’’
তবে সলমনের সুর শ্যাম বেনেগালের মতো পরিচালকের গলাতেও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গোটা বিষয়টাই সরকারের। শিল্পীরা আসেন কারণ তাঁদের কোনও না কোনও প্রকল্পের জন্য ডাকা হয়। তাঁদের দোষটা কোথায়?’’
প্রযোজক টিপি অগ্রবাল জানিয়েছেন, তাঁর পরবর্তী ছবি ‘লালি কি শাদি মে লাড্ডু দিওয়ানা’য় পাক শিল্পী রাহাত ফতেহ আলি খানের গান গাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই চুক্তি তিনি বাতিল করে দিয়েছেন। তবে এর বিপরীত দিকও আছে। ইম্পার সদস্যপদ থেকে আজ ইস্তফা দিয়েছেন রাহুল অগ্রবাল নামে এক প্রযোজক। সভাপতিকে লেখা চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, উরি হামলা তিনি সমর্থন করেন না। কিন্তু পাক শিল্পীদের নিষিদ্ধ করাও যুক্তিযুক্ত নয়।
সীমান্তের এ-পারের ছবিটা যদি এ রকম হয়। ও-পারেরটাও কিন্তু প্রায় একই রকম। পাকিস্তানের সব বড় বড় শহরের সিনেমা হলের মালিকরা ভারতীয় ছবি দেখানো বন্ধ করে দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘পাক সেনা বাহিনীর পাশে দাঁড়াতেই
এই সিদ্ধান্ত।’’ নতুন প্রজন্মের হার্টথ্রব ফাওয়াদ খান ভারত ছেড়েছেন দিন কয়েক আগে। তালিকা কি আরও দীর্ঘ হওয়ার অপেক্ষায়?