ভারতের রাস্তায় এক সময় দাপিয়ে বেড়াত এরা। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে, প্রযুক্তি যত উন্নত হয়েছে, তার সঙ্গে যুঝতে না পেরেএরা ক্রমশ উধাও হয়েছে নিঃশব্দে। এমনই ১০টি স্টেশন ওয়াগন যা দেশবাসীর বিস্মৃতিতে চলে গিয়েছে। সেই তালিকাটা এক বার দেখে নেওয়া যাক। প্রতীকী ছবি।
ফিয়াট পদ্মিনী প্রিমিয়ার সাফারি: ফিয়াটের স্টেশন ওয়াগন ভ্যারিয়্যান্ট এটি এবং ভারতের রাস্তায় যে স্টেশন ওয়াগনগুলো দেখা যায় তাদের মধ্যে প্রথম পদ্মিনী প্রিমিয়ার। প্রস্তুতকারক সংস্থা মুম্বইয়ের স্টারলাইন মোটরস। ১৯৭৩-এ ভারতের বাজারে আসে এটি। গাড়ির লুক এবং ফিচার তেমন আকর্ষণীয় না হওয়ায় আশির দশকেই হারিয়ে গিয়েছে।
মারুতি বালেনো অলটুরা: এর সময়কার সেডানগুলোর মধ্যে আকর্ষণীয় ছিল গাড়িটি। গাড়িটিতে পাওয়ার স্টিয়ারিং, ইলেকট্রিক উইন্ডো-সহ সমস্ত স্বাচ্ছন্দ্য থাকা সত্ত্বেও সে ভাবে গ্রাহকদের মনে সাড়া জাগাতে পারেনি। ১৯৯৯-এ এই স্টেশন ওয়াগনটি ভারতের বাজারের আসে। মাত্র আট বছরের মধ্যে অর্থাত্ ২০০৭-এ এর উত্পাদন বন্ধ হয়ে যায়।
স্কোডা অক্টাভিয়া কম্বি: এটি এস্টেট ভ্যারিয়্যান্ট। স্টাইল, ডিজাইন এবং প্রযুক্তি— কোনও দিক থেকেই খামতি ছিল না। শর্ট ট্রিপ হোক বা লং ট্রিপ, এই গাড়ি তার সমকালীন গাড়িগুলোকে টেক্কা দিত। দাম ছিল প্রায় ১৫ লক্ষ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই গাড়ির চাহিদা কমে আসায় রাস্তা থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে।
ওপেল কোরসা সুইং: ২০০৩-এ বাজারে আসে গাড়িটি। কোরসা সেডানের মতো দেখতে ছিল এই স্টেশন ওয়াগনটি। ভারতের বাজারে সে সময় যে সব স্টেশন ওয়াগনগুলো ছিল তাদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম ছিল এটি। সর্বোচ্চ গতি ১৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
টাটা ইন্ডিগো মারিনা: টাটা ইন্ডিকার উত্তরসূরি ইন্ডিগো। এর যে সব ভ্যারিয়্যান্টগুলো ছিল তার মধ্যে অন্যতম মডেল মারিনা। প্রথমের দিকে সাড়া জাগালেও এর খারাপ গুণগত মানের কারণেই ভারতের বাজারে চাহিদায় ভাটা পড়ে। ডিজেল, পেট্রোল দুটো ভ্যারিয়ান্টই এনেছিল টাটা। ২০১২-য় এর উত্পাদন বন্ধ হয়ে যায়।
রোভার মন্টেগো স্টেশন ওয়াগন: ব্রিটেনের রোভার মোটরস-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ভারতের বাজারে এই মডেলটি নিয়ে আসে বেঙ্গালুরুর সিপানি অটোমোবাইলস। ১৯৯৩-তে ভারতের বাজারে নিয়ে আসা হয় গাড়িটি। সানরুফ ও সেল্ফ লেভেলিং সাসপেনশনের মতো ফিচার ছিল এতে।
টাটা এস্টেট: টাটা মোটরস তৎকালীন টেলকো-র প্রথম যাত্রিবাহি গাড়ি টাটা এস্টেট। ১৯৯২-তে এর উত্পাদন শুরু হয়। তবে ২০০০ সালের পর গাড়িটির উৎপাদন বন্ধ করে দেয় টাটা। সে সময় ভারতের আধুনিতম গাড়িগুলির মধ্যে ছিল এস্টেট। তবে সাসপেনশন, অত্যধিক ফুয়েল কমসাম্পসন, ক্রুটিযুক্ত ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেমের কারণে চাহিদা হারায়।
ফিয়াট উইকএন্ড: সিয়েনা-বেসড স্টেশন ওয়াগন এটি। ২০০২-এ ভারতের বাজারে আসে গাড়িটি। মডেলটির ডিজাইন করেন জিওরগেট্টো গুইগিয়ারো। সংস্থার রঞ্জনগাঁও প্ল্যান্টে গাড়িটি উত্পাদন করা হত। অন্যান্য ফিয়াটের মতোই এর ভাগ্য সদয় হয়নি।
ফিয়াট পালিও অ্যাডভেঞ্চার: ফিয়াট উইকএন্ড-এর অ্যাডভেঞ্চার মডেল পালিও। দুর্দান্ত লুক, ফিচার থাকা সত্ত্বেও গাড়িপ্রমেীদের চাহিদা অর্জন করতে পারেনি। ফলে শেষমেশ মডেলটির উৎপাদন বন্ধ করে দেয় সংস্থা।