Jail

দলিত, মুসলিম, আদিবাসী বন্দির সংখ্যা বাড়ছে, বলছে ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো

এনসিআরবি-র দেওয়া তথ্য বলছে, দেশে মুসলিম, দলিত এবং উপজাতি জনসংখ্যার অনুপাতে ওই সম্প্রদায়ের বন্দির সংখ্যা বাড়ছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২০ ১৫:২০
Share:

প্রতীকী ছবি

বিচারাধীন হোক বা অপরাধী, দেশে বাড়ছে মুসলিম, দলিত এবং আদিবাসী বন্দির সংখ্যা। সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনল ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস বুরো (এনসিআরবি)। এনসিআরবি-র দেওয়া তথ্য বলছে, দেশে মুসলিম, দলিত এবং উপজাতি জনসংখ্যার অনুপাতে ওই সম্প্রদায়ের বন্দির সংখ্যা বাড়ছে। ওই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে শাস্তিপ্রাপ্ত বন্দির থেকে বিচারাধীন বন্দির সংখ্যা বেশি। তবে এই ছবি অবশ্য অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণি (ওবিসি) বা সাধারণ জাতির ক্ষেত্রে দেখা যায়নি।

এনসিআরবি-র দেওয়া তথ্য বলছে—

• ২০১৯ সাল পর্যন্ত সারা দেশে ‘দলিত’ অপরাধীর হার ২১.৭ শতাংশ।

Advertisement

• জেলে বিচারাধীন বন্দি হিসাবে তফসিলি জাতির মানুষ রয়েছেন ২১ শতাংশ। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যার ১৬.৬ শতাংশ তফসিলি জাতিভুক্ত।

• দোষী সাব্যস্ত বন্দিদের মধ্যে ১৩.৬ শতাংশ তফসিলি উপজাতি ভুক্ত এবং ১০.৫ শতাংশ এখনও বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছেন। অবশ্য ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে ভারতে আদিবাসী রয়েছেন মাত্র ৮.৬ শতাংশ।

Advertisement

• দেশের মোট জনসংখ্যার ১৪.২ শতাংশ মুসলিম। কিন্তু জেলে মুসলিম অপরাধী সেই অনুপাতে বেশি। জেলে মুসলিম অপরাধী রয়েছেন ১৬.৬ শতাংশ। বিচারাধীন অবস্থায় বন্দি রয়েছেন ১৮.৭ শতাংশ মুসলিম।

এনসিআরবি-র এই পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে আসার পর ফের উঠে আসছে বিচারব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রিতার পুরনো অভিযোগ। বুরো অব পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রাক্তন প্রধান এন আর ওয়াসন ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে আমাদের দেশের বিচারব্যবস্থা শুধুমাত্র ধীরগতিরই নয়, তা দরিদ্র মানুষের স্বার্থের পরিপন্থীও বটে।’’

আরও পড়ুন: উৎসবের দিনে ‘দো গজ কি দূরি, মাস্ক জরুরি’, ‘মন কি বাত’-এ বার্তা মোদীর

মুসলিম, দলিত বা আদিবাসীদের ক্ষেত্রে যে ছবিটা এনসিআরবি-র পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে তেমনটা অবশ্য ওবিসি-র ক্ষেত্রে নয়। ২০০৬ সালের ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভে অর্গানাইজেশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের জনসংখ্যার ৪১ শতাংশ ওবিসি শ্রেণিভুক্ত। কিন্তু জেলে যাঁরা দোষী সাব্যস্ত অবস্থায় রয়েছেন তাদের মধ্যে ওই শ্রেণির ৩৫ শতাংশ মানুষ রয়েছেন। এ ছাড়া বিচারাধীন বন্দিদের মধ্যে রয়েছেন ৩৪ শতাংশ। দোষী সাব্যস্ত হওয়া জেলবন্দিদের মধ্যে হিন্দু ‘উচ্চবর্ণ’ বা প্রান্তিক নন এমন শ্রেণির হার ১৩ শতাংশ এবং বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছেন ১৬ শতাংশ। জনসংখ্যার নিরিখে সারা দেশে ওই শ্রেণির মানুষ রয়েছেন ১৯.৬ শতাংশ।

আরও পড়ুন: তিব্বতকে ‘দুর্ভেদ্য দুর্গ’ বানাতে মগজধোলাইয়ের বার্তা চিনফিংয়ের

বন্দিদের নিয়ে এনসিআরবির রাজ্যকেন্দ্রিক পরিসংখ্যানও চাঞ্চল্যকর। উত্তরপ্রদেশের ‘দলিত’ বিচারাধীন বন্দির সংখ্যা সর্বোচ্চ, ১৭ হাজার ৯৯৫ জন। এর পর রয়েছে বিহার (৬,৮৪৩) এবং পঞ্জাব (৬,৮৩১)। আদিবাসী বিচারাধীন বন্দির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি মধ্যপ্রদেশে, ৫ হাজার ৮৯৪ জন। এর পর রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (৩,৯৫৪) এবং ছত্তীসগঢ় (৩,৪৭১)। উত্তরপ্রদেশে সর্বোচ্চ মুসলিম বিচারাধীন বন্দির সংখ্যা, ২১ হাজার ১৩৯ জন। এর অনেকটা পিছনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিহার (৪,৭৫৮) এবং মধ্যপ্রদেশ (২,৯৪৭)। মুসলিম অপরাধীদের ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে উত্তরপ্রদেশ। উত্তরপ্রদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যা দলিত অপরাধীদেরও, ৬ হাজার ১৪৩। এর পর রয়েছে মধ্যপ্রদেশ এবং পঞ্জাব। অবশ্য মধ্যপ্রদেশে আদিবাসী অপরাধীর সংখ্যা দেশে সর্বোচ্চ, ৫ হাজার ৩০৩ জন। এর পর রয়েছে ছত্তীসগঢ় এবং ঝাড়খণ্ড।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement