সহযাত্রীর বিরুদ্ধে প্রস্রাব করার অভিযোগ উঠলেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথেষ্ট পদক্ষেপ না করার অভিযোগ উঠেছে এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে। ফাইল চিত্র।
এয়ার ইন্ডিয়ার আন্তর্জাতিক বিমানে মুম্বইয়ের এক শিল্পপতি মত্ত অবস্থায় সহযাত্রীর গায়ে প্রস্রাব করে দেন। এই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। নভেম্বরে ঘটনা ঘটার এত দিন পরেও কেন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা গেল না, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।
তবে বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ডিজিসিএ) সূত্রে জানা গিয়েছে, বিমানের ভিতর অভব্য আচরণের জন্য কঠোর সাজা দেওয়ার সংস্থান আছে। বিমানে কেউ অভব্য আচরণ করলে বিমানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসাবে অভিযোগ দায়ের করেন পাইলট। তারপর বিমান সংস্থাটির অভ্যন্তরীণ একটি কমিটি অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে থাকে। ৩০ দিনের মধ্যে এই কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়। একই ব্যক্তি বারংবার অভব্য আচরণ করে থাকলে শাস্তির পরিমাণ এবং মেয়াদ দ্বিগুণ হতে থাকে। অভিযুক্ত যাত্রীর বিরুদ্ধে যত দিন তদন্ত চলে, তত দিন তাঁকে দেশের কোনও বিমানে উঠতে দেওয়া হয় না।
ডিজিসিএ-র বিধি মোতাবেক অপরাধ অনুযায়ী শাস্তিরও অনেক তারতম্য হয়ে থাকে। বিমানের ভিতর অশ্লীল কথা বললে, গালিগালাজ করলে সংশ্লিষ্ট যাত্রীর ৩ মাসের জন্য বিমানে ওঠায় নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে। অভিযুক্ত যাত্রী কারও গায়ে হাত তুললে এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বেড়ে ৬ মাস পর্যন্ত হতে পারে। অভিযুক্ত কাউকে প্রাণে মারার হুমকি দিলে কিংবা তেমন কিছু করার চেষ্টা করলে ২ বছরের জন্য বিমানে ওঠায় নিষেধা়জ্ঞা জারি হতে পারে। আর অভিযুক্ত যাত্রীর কোনও আচরণ যদি জাতীয় নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করে, তবে আরও কঠোর পদক্ষেপ করার সংস্থান আছে।
বিমানের ভিতর সহযাত্রীর গায়ে প্রস্রাব করার ঘটনা অন্যান্য দেশেও ঘটেছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অভিযুক্তকে বেশ কয়েক বছরের জন্য জেলে যেতে হয়েছে। ভারতে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এয়ার ইন্ডিয়া তুলনায় অনেক দুর্বল অবস্থান নিয়েছে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ৩০ দিনের জন্য তাঁর বিমানে ওঠায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। তবে এখনও তাঁকে গ্রেফতার করা যায়নি।
গত ২৬ নভেম্বর এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান নিউ ইয়র্ক থেকে দিল্লি আসছিল। সেই বিমানের বিজ়নেস ক্লাসের যাত্রী ছিলেন শঙ্কর মিশ্র। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় তাঁর পাশে বসা বছর সত্তরের এক বৃদ্ধার গায়ে প্রস্রাব করে দেন তিনি। এই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায়। ২৬ নভেম্বর ঘটনাটি ঘটলেও ২৮ ডিসেম্বর বিষয়টি পুলিশকে জানায় বিমান সংস্থাটি। কেন অভিযোগ জানাতে এত দেরি হল, তার ব্যাখ্যা চেয়ে এয়ার ইন্ডিয়াকে নোটিস পাঠিয়েছিল দেশের বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ডিজিসিএ)।
এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও ক্যাম্পবেল উইলসন কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন, তাঁরা যেন কোনও রকম অভব্য আচরণ বরদাস্ত না করেন। বিমানে এমন কোনও ঘটনা ঘটলে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত জানাতে হবে।