প্রতীকী ছবি
দ্রুত স্কুল খুলতে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের টিকাকরণ অতিপ্রয়োজনীয় বলে মনে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(হু) ও ইউনিসেফ। দুই সংস্থার বক্তব্য, পড়াশোনার ক্ষেত্রে এত বড় বিপর্যয় আগে দেখা যায়নি। তাই আগামী দিনে অতিমারির মধ্যেও যাতে স্কুল খোলা রাখা সম্ভব হয়, তাই প্রতিষেধক প্রদানে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের এখন অগ্রাধিকার দিতে হবে। পরবর্তী ধাপে ১২ বছরের উপরে থাকা পড়ুয়াদের টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসার পক্ষে সওয়াল করেছে হু ও ইউনিসেফ।
শিক্ষার চেয়ে জীবন দামী— এই যুক্তিতে গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে স্কুল বন্ধ রয়েছে। দেশে করোনার সংক্রমণের রেখচিত্র নিম্নমুখী হওয়ায় বেশ কিছু রাজ্যে স্কুল খুলে দিয়েছে বা আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল খুলতে চলেছে। স্কুল থেকে যাতে নতুন করে সংক্রমণ না ছড়ায়, তাই সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীদের টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছে হু। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের টিকাকরণ হয়ে গেলে অতিমারির মধ্যেও স্কুল খুলে রাখা সম্ভব। কারণ, একটি শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা, তার মানসিক বিকাশ, সামাজিক গুণাবলি অর্জনের পিছনে স্কুলের ভূমিকা অপরিসীম। যা করোনাকালে অনেকাংশের ধাক্কা খেয়েছে। তাই ভারত-সহ বিভিন্ন দেশকে স্কুলে দ্রুত পঠনপাঠনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছে হু। তবে অতিমারির আবহে প্রয়োজনে অল্প সংখ্যায় পড়ুয়াদের উপস্থিতি, পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব, ধাপে ধাপে ক্লাস খুলে দেওয়ার উপরে প্রাথমিক ভাবে জোর দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। একই সঙ্গে, জোর দেওয়া হয়েছে ১৮ বছরের কম বয়সিদের টিকাকরণের উপরে। বিশেষ করে ১২ বছরের ঊর্ধ্বে থাকা পড়ুয়াদের সম্ভব হলে দ্রুত টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসার পক্ষেও সওয়াল করেছে তারা।
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল খুলছে দিল্লিতে। নবম শ্রেণি থেকে স্নাতকোত্তর স্তর পর্যন্ত ক্লাসগুলি চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। খুলে দেওয়া হচ্ছে উঁচু ক্লাসের কোচিং কেন্দ্র। দিল্লি সরকারের তরফে প্রতিটি স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে বলা হয়েছে, তারা যেন প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর টিকাকারণ নিশ্চিত করে। প্রতিটি স্কুলের প্রবেশ পথে পড়ুয়াদের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক বলে জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, স্কুলগুলিতে প্রতিটি শ্রেণির জন্য পৃথক সময়ে মধ্যাহ্নভোজের বিরতির ব্যবস্থা করতে। পড়ুয়ারা আপাতত যাতে নিজেদের খাবার, পেন-পেন্সিল, খাতা, জলের বোতল অন্যদের সঙ্গে ভাগ না-করে সে দিকে নজর রাখতে হবে। স্কুলে বিশ্রামের জন্য একটি করে নিভৃতবাস তৈরি করা ছাড়াও শিক্ষাকর্মী বা পড়ুয়ারা যদি কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাসিন্দা হয়, তা হলে তাদের স্কুল আসতে নিষেধ করা হয়েছে।
জানানো হয়েছে, পড়ুয়াদের স্কুলে আসার জন্য বাবা-মায়ের অনুমতি আবশ্যক। যে সব স্কুল টিকাকরণ কেন্দ্র ও রেশন বিতরণের কাজে ব্যবহার হচ্ছে, সেখানে পড়ুয়াদের স্কুলে প্রবেশের জন্য আলাদা রাস্তা রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যাঁরা টিকা বা রেশন নিতে আসছেন, তাঁদের থেকে পড়ুয়াদের দূরে রাখতেই হবে। প্রয়োজনে স্কুলের সময়ের পরে ওই কাজগুলি করতে বলা হয়েছে।