ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোয় পশ্চিমী দুনিয়ার নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে কিছুটা বিপাকে রাশিয়া। অর্থনীতি সামাল দিতে কম দামে তেল-সহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মস্কো। আর এ সুযোগ নিতে আগ্রহী ভারত।
ফাইল চিত্র।
রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের মধ্যেই ইউরোপের দেশগুলি অশোধিত তেল আমদানি করছে মস্কো থেকে। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ভারতের জন্য তা সুসংবাদ। কারণ, আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইউরোপের উদাহরণ দেখিয়ে ভবিষ্যতে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি প্রয়োজনে বাড়াতে পারবে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী আজ এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তিনি বলেন, “ভারত আন্তর্জাতিক বাজার থেকে অশোধিত তেল আমদানির সমস্ত রকম সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। রাশিয়া থেকে ইউরোপের অনেক দেশ এখনও তেল আমদানি করছে। আমরা সে দিকে নজর রাখছি।”
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোয় পশ্চিমী দুনিয়ার নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে কিছুটা বিপাকে রাশিয়া। অর্থনীতি সামাল দিতে কম দামে তেল-সহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মস্কো। আর এ সুযোগ নিতে আগ্রহী ভারত। রুপি-রুবল লেনদেনের মাধ্যমে অপরিশোধিত তেল কেনার দিকে নজর দিল্লির। সূত্রের খবর, রাশিয়ার থেকে ৩৫ লক্ষ ব্যারেল তেল কম দামে কেনার চুক্তি প্রায় সম্পূর্ণ ভারতের। অন্য দিকে আমেরিকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাশিয়া থেকে তেল কেনার বিষয়টি আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ছে না। যদিও ইতিহাসে দিল্লির ভূমিকা কী দাঁড়াবে, সে দিকেও নজর রাখতে বলেছে।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ইউরোপের বিপুল তেল-নির্ভরতার বিষয়টি আমেরিকার অজানা নয়। আর সে কারণে এই ক্ষেত্রে সার্বিক নিষেধাজ্ঞা জারি না করে আমেরিকা শুধু নিজের দেশে রাশিয়া থেকে তেল আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে। এ কথাও কারও অজানা নয়, যুদ্ধের মধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফে রাশিয়ার একাধিক তেল সংস্থার সঙ্গে আমদানি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এরপর কারও (আমেরিকার) নৈতিক জোর নেই যে ভারতকে রাশিয়া থেকে তেল কিনতে নিষেধ করবে। এমনিতেই রাশিয়া থেকে ভারতের অশোধিত তেল আমদানি দেশের মোট আমদানির মাত্র ২ শতাংশ। কিন্তু এখানে সংখ্যাটা বড় কথা নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। এই টানটান সংঘাতের পরিস্থিতিতে বিষয়টির প্রতীকী মূল্য রয়েছে। তা ছাড়া, ভবিষ্যতে এই আমদানির পরিমাণ ভারত বাড়াতে পারে।
তেলের দাম মেটানোর ক্ষেত্রে পুরনো রুপি-রুবল ব্যবস্থাটি আবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। নিষেধাজ্ঞা-পরবর্তী সময়ে প্রশ্ন উঠছে, ডলারকেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রধান মুদ্রা হিসাবে গণ্য করা ঠিক কি না। সৌদি আরব ইতিমধ্যেই চিনের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেছে, সে দেশে তেল বিক্রি ইয়ানের মাধ্যমে করা যায় কি না।