লখিমপুরের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল আট কৃষকের। ফাইল চিত্র।
আন্দোলনকারী কৃষকদের গাড়ির চাকায় পিষে দেওয়া হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের লখিমপুরে। দুর্ঘটনা নয়! তদন্তকারীরা বলেছিলেন, কৃষকদের ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছে। আর সেই ষড়যন্ত্রীদের মধ্যে অন্যতম কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের পুত্র আশিস মিশ্র। তবে আশিস বা এই মামলার অন্য অভিযুক্তদের আগামী পাঁচ বছর কোনও শাস্তি না-ও হতে পারে। বুধবার লখিমপুরের ঘটনার এক বছর তিন মাস পর সুপ্রিম কোর্টকে উত্তরপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, মামলাটির শুনানি শেষ হতে সময় লাগবে আরও প্রায় পাঁচ বছর।
লখিমপুর খেরিতে কৃষক হত্যার ঘটনায় বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হতে কত দিন লাগবে, তা জানতে চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এ ব্যাপারে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকারের কাছে একটি স্টেটাস রিপোর্ট চেয়েছিল শীর্ষ আদালত। বুধবার সেই স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিয়েছে যোগী সরকার। রিপোর্টে লখিমপুর মামলার ভারপ্রাপ্ত দায়রা আদালতের বিচারক সূর্যকান্ত এবং বিচারক ভি রামাসুব্রহ্মণ্যম জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধে ওই মামলায় ২০৮ জন সাক্ষ্য, ১৭১টি নথি এবং ২৭টি ফরেনসিক গবেষণার রিপোর্ট যাচাই করে দেখতে হবে। দুই বিচারকের কথায়, এ ধরনের মামলায় সাধারণত পাঁচ বছরের কাছাকাছি সময় লেগেই যায়।
লখিমপুরের ঘটনায় আশিসের জামিনের মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলার শুনানিতেই গত মাসে শীর্ষ আদালত উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিল, মামলাটি শেষ হতে সাধারণ ভাবে কত সময় লাগতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করেছিল, যদি আদালতে চলা অন্য মামলাগুলির থেকে এই মামলাটিকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে বিচার করা না হয়, তা হলে কত সময় লাগবে। বুধবার সেই প্রশ্নেরই জবাব দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের দায়রা আদালতের দুই বিচারক।
প্রসঙ্গত, গত ৩ অক্টোবর লখিমপুর খেরিতে আশিসের বেপরোয়া গাড়ির চাকায় পিষে বিক্ষোভকারী ৪ কৃষকের মৃত্যু হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরবর্তী হিংসায় আরও ৪ জনের প্রাণ যায়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয়ের দাবি ছিল, ঘটনার সময় ওই গাড়িতে ছিলেন না আশিস। যদিও যোগীরাজ্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) আদালতে জানিয়েছে, এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। সে দিন কৃষকদের গাড়ি চাপা দেওয়ার পাশাপাশি, গুলিও চালানো হয়েছিল। ফরেন্সিক রিপোর্ট বলছে, আশিসের বন্দুক থেকে গুলি ছোড়া হয়েছিল। গুলি চলেছিল এই মামলার আরেক অভিযুক্ত আশিসের সঙ্গী অঙ্কিত দাসের বন্দুক থেকেও।