প্রতীকী ছবি
লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় জট ছাড়াতে কূটনৈতিক এবং সামরিক পর্যায়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হবে। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে আজ একটি বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানানো হয়েছে। মন্ত্রক সূত্রের ইঙ্গিত, পরিস্থিতি আবার আগের জায়গায় ফিরে যেতে এখনও অনেক আলোচনার রাস্তা অতিক্রম করতে হবে। সহজেই আসবে না সমাধান।
গত কাল আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারত এবং চিনের মধ্যে সামরিক পর্যায়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বৈঠকের পরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সমস্যা মেটাতে প্রয়োজন রয়েছে কূটনৈতিক আলোচনারও। আজ তারই কার্যত পুনরাবৃত্তি করেছে বিদেশ মন্ত্রক। অন্য দিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘ভারতের সামরিক নীতি গোটা বিশ্বের স্বীকৃতি পেয়েছে। পৃথিবী আজ একবাক্যে বলে, আমেরিকা এবং ইজ়রায়েলের পরে নিজেদের সীমান্ত যদি কেউ রক্ষা করতে পারে তাহলে সেটা ভারত।’
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, দেশের সেনাদের মনোবল চাঙ্গা করার জন্য বলা কথা এবং বাস্তবের মাটিতে পরিস্থিতির মধ্যে অনেক সময়ই পার্থক্য থাকে। গত কাল সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকেই বলা হয়েছিল, আলোচনা সবে শুরু হয়েছে। তাই এ নিয়ে সংবাদমাধ্যম যেন জল্পনা না করে। কারণ এখনও জট খোলার পথে বহু ধাপ বাকি। উত্তেজনা আর বাড়তে না দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি আলোচনা চালাতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত যদি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে লে থেকে দৌলত বাগ পর্যন্ত নির্মীয়মাণ সড়কের কাজ বন্ধ করে দেয়, সমস্যা মিটে যাবে। সেনা সরিয়ে নেবে চিন। কিন্তু ভূকৌশলগত এবং রাজনৈতিক কারণে পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ বন্ধ করে চিনের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে শান্তি ফেরানো মোদী সরকারের পক্ষে সম্ভব নয় বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। ফলে ভারতের শর্ত চিনকে মানিয়ে জট ছাড়ানোর প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। এটাও ভারত হিসেবের মধ্যে রাখছে যে এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কোভিডের কারণে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে রয়েছে চিন। তাদের একঘরে করার জন্য হুঙ্কার দিচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের অবস্থানকে লঘু না করে কীভাবে শান্তি ফেরানো যাবে, সেটা নিঃসন্দেহে চ্যালেঞ্জ সামরিক এবং কূটনৈতিক— দুই শিবিরের কাছেই।
আজ সকালে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, গতকালের বৈঠকটি হয়েছে ইতিবাচক এবং হৃদ্যতাপূর্ণ আবহাওয়ায়। চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শান্তিপূর্ণ ভাবে সঙ্কট মেটানোর ব্যাপারে দু’পক্ষই একমত হয়েছে। ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সামগ্রিক অগ্রগতির জন্য প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি ও সুস্থিতি বজায় রাখা প্রয়োজন। দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি হয়েছে চলতি বছরে। বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যত তাড়াতাড়ি জট ছাড়ানো যায় ততই মঙ্গল।