জেএমএম বিধায়ক লবিন হেমব্রম (বাঁ দিকে) হেমন্ত সোরেনকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। —ফাইল চিত্র।
আস্থা ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগে ‘বেঁকে বসেছিলেন’ হেমন্ত সোরেনের দলের এক বিধায়ক। নাম লবিন হেমব্রম। রবিবার সেই বিদ্রোহী বিধায়ক আবার মত বদলালেন। আস্থা ভোটে দলের পাশে না দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেওয়া বিধায়ক জানালেন, তিনি চম্পাই সোরেনের সরকারকে সমর্থন করতে প্রস্তুত। যদি সরকার তাঁর দেওয়া কিছু শর্ত মেনে চলতে রাজি হয়।
শনিবারই লবিন বলেছিলেন, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্তকে যে কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই অভিযোগের সারবত্তা আছে। দলের অন্যতম শীর্ষনেতা হেমন্তকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন বলেও দাবি করেন লবিন। এর পরই ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক মহলের আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন লবিন। অনেকেই বলতে শুরু করেন, তবে কি লবিনই ঝাড়খণ্ডের শাসকবিরোধী ভাবনায় হাওয়া দিচ্ছেন। হেমব্রমের ওই বিদ্রোহের নেপথ্যে বিরোধী শক্তির কলকাঠি রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন কেউ কেউ। কিন্তু সেই বিদ্রোহে শেষ পর্যন্ত ইতি টানলেন হেমব্রম নিজেই। সোমবার ঝাড়খণ্ডে চম্পই সোরেন সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতার পরীক্ষা দেওয়ার আগের সন্ধ্যায় জেএমএম প্রধান তথা ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্তের পিতা শিবু সোরেনের সঙ্গে একটি বৈঠক হয় লবিনের। জেএমএম সূত্রে খবর, তার পরেই মত বদলেছেন বিদ্রোহী বিধায়ক।
জেএমএম সূত্রে জানা গিয়েছে, লবিন সোমবার জেএমএমের জোট সরকারকেই সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে একই সঙ্গে এই সমর্থনের বিনিময়ে কিছু শর্তও আরোপ করেছেন তিনি।
জেএমএম প্রতিষ্ঠাতা শিবুর কাছে মোট পাঁচটি শর্তের কথা বলেছেন জেএমএম বিধায়ক। তার মধ্যে প্রথমেই বলা হয়েছে, ঝাড়খণ্ডে মদের বিক্রি বন্ধ করতে হবে। যুক্তি হিসাবে হেমব্রম জানিয়েছেন, মদ্যপান সংক্রান্ত সামাজিক সমস্যা দূর করতেই এই শর্ত দিচ্ছেন তিনি। এ ছাড়া বন এবং জল সংরক্ষণ সুরক্ষা, ছোটনাগপুর এবং সাঁওতাল পরগনার ভাড়াটিয়া আইন কার্যকর করার কথা বলেছেন তিনি। লবিনের আরও একটি মূল শর্ত হল, গ্রামসভার অনুমতি ছাড়া রাজ্য বা কেন্দ্রকে জমি অধিগ্রহণ করতে দেওয়া যাবে না। আর তাঁর পঞ্চম শর্ত হল গ্রামসভার অনুমতি ছাড়া খনি লিজ দেওয়াও যাবে না।
হেমব্রমের এই পাঁচটি শর্ত জেএমএম মেনে নিয়েছে কি না তা স্পষ্ট নয়। তবে ঝাড়খণ্ডের রাজনাতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, মেনে না নিলেও লবিনের কিছু করার নেই সম্ভবত। জেএমএম বুদ্ধি করে ৪০ জন বিধায়ককে ঝাড়খণ্ড থেকে রিসর্টে সরিয়ে দেওয়ায় তাঁর বিদ্রোহ ঝাড়খণ্ডের বাকি বিধায়কদের মধ্যে বিশেষ ডালপালা মেলতে পারেনি। সম্ভবত সেই জন্যই রবিবার লবিনকে বলতে শোনা গিয়েছে, বিধায়কদের রিসর্টে রাখা হল কেন? আমরা যদি জোট বদ্ধ হই তবে ঝাড়খণ্ডে থেকেও জোট বদ্ধই থাকব। অনেকেই মনে করছেন, আফসোস থেকেই এমনটা বলেছেন লবিন।