Jharkhand

জট কাটেনি ঝাড়খণ্ডে, শাসক জোটে তৎপরতা

খনি লিজ মামলার জেরে হেমন্তের ভাগ্য এখনও খামবন্দি হয়ে রয়েছে রাজভবনে। গত বৃহস্পতিবার ওই মামলায় নিজেদের রায় একটি চিঠিতে রাজ্যপাল রমেশ ব্যাসকে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৩১
Share:

মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। ফাইল চিত্র।

ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টায়নি। এমতাবস্থায় আগামিকাল মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। ফলে ঘর বাঁচাতে রায়পুরে যাওয়া শাসক জোটের বিধায়কদের মধ্যে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-র চার মন্ত্রী আজ সন্ধ্যায় রাঁচী ফিরেছেন। সূত্রের খবর, বিধায়কদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে রায়পুরে যেতে পারেন হেমন্ত নিজেও।

Advertisement

খনি লিজ মামলার জেরে হেমন্তের ভাগ্য এখনও খামবন্দি হয়ে রয়েছে রাজভবনে। গত বৃহস্পতিবার ওই মামলায় নিজেদের রায় একটি চিঠিতে রাজ্যপাল রমেশ ব্যাসকে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। চিঠি রাঁচীতে পৌঁছনোর পরে এক সপ্তাহ কেটে গেলেও এ নিয়ে মুখ খোলেননি রাজ্যপাল। ফলে এক দিকে হেমন্তের মুখ্যমন্ত্রিত্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে যেমন জল্পনা তৈরি হয়েছে, তেমনিই রাজভবনের দীর্ঘসূত্রিতার মধ্যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র দেখছে জেএমএম। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি ঘিরে সঙ্কট দেখা দিতেই বিধায়ক ‘ভাঙানো’র আশঙ্কা করছে জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডি জোট। শাসক শিবিরের অভিযোগ, বিজেপির ইশারাতেই বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কারণ, সময়কে কাজে লাগিয়ে শাসক জোটের বিধায়ক ‘কেনার’ প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। জেএমএম নেতৃত্বের বক্তব্য, সাত দিন হয়ে যাওয়ার পরেও কমিশনের চিঠি রাজ্যপাল প্রকাশ না করার ঘটনা কার্যত অভূতপূর্ব। রাজ্যপাল কেন এবং কার নির্দেশে ওই চিঠি প্রকাশ্যে আনেননি তা জানানোর দাবি তুলেছেন জেএমএম নেতৃত্ব।

কংগ্রেস শাসিত ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরে গতকাল চলে গিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের শাসক জোটের বিধায়কেরা। আগামিকালের মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ দিতে আলমগির আলম, বান্না গুপ্ত, রামেশ্বর ওরাঁও এবং বাদল পত্রলেখ নামে চার মন্ত্রী রাঁচী ফিরছেন। রায়পুর বিমানবন্দরে আলমগির বলেন, ‘‘আমরা রাঁচী যাচ্ছি আগামিকালের মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ দিতে। গোয়া, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, মহারাষ্ট্রে বিজেপি যা করেছে, ঝাড়খণ্ডেও তাই করতে চায়। সংখ্যা নিয়ে আমাদের কোনও চিন্তা নেই।’’ বৈঠকের পরে ফের তাঁরা রায়পুর ফিরে যাবেন বলে খবর। সঙ্গে যাওয়ার কথা হেমন্তেরও।

Advertisement

ঝাড়খণ্ডের শাসক জোটের বিধায়কেরা রায়পুরে যাওয়ায় সমালোচনায় সরব বিজেপি নেতা তথা ছত্তীসগঢ়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ। যা নিয়ে ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের পাল্টা, ‘‘মহারাষ্ট্রের মতো ঝাড়খণ্ডেও সরকার ফেলতে তৎপর বিজেপি। বিধায়ক পিছু মহারাষ্ট্রে ৫০ কোটি দেওয়া হয়েছিল। ঝাড়খণ্ডের ক্ষেত্রে ২০ কোটি। ওই রাজ্যে জোট সরকারে কংগ্রেস রয়েছে। তাই ওই সরকার বাঁচানো আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।’’

খামবন্দি চিঠিতে কমিশন হেমন্ত সম্পর্কে কী সুপারিশ করেছে, সেটিই এখন ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে মূল আলোচ্য বিষয়। হেমন্তের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধি আইন ভাঙা ও লাভজনক পদের মামলায় বিধায়ক পদ খারিজের সঙ্গেই তিনি যাতে আগামী ছ’ বছর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারেন সেই দাবিও তুলেছে বিজেপি। কিন্তু সূত্রের মতে, কমিশন কেবল হেমন্তের বিধায়ক পদ খারিজেরই সুপারিশ করে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছে। শাসক শিবিরের দাবি, অঙ্ক না মেলায় তাই এখন রাজ্যপালকে চিঠি প্রকাশ করতে বাঁধা দিচ্ছে বিজেপি। জেএমএম সূত্রের দাবি, হেমন্তকে যদি আগামী দিনে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তেই হয়, সে ক্ষেত্রে রাজ্য চালানোর ভার পিতা শিবু সোরেন বা স্ত্রী কল্পনার হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে এগিয়ে হেমন্ত-পত্নীই। যাতে পরবর্তী সময়ে উপনির্বাচনে জিতে ফের রাজ্যের হাল ধরতে পারবেন হেমন্ত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement