প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
ফৌজদারি আইন সংক্রান্ত তিনটি বিল ফের নতুন চেহারায় পেশ করার সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
সূত্রের খবর, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিল, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা বিল ও ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম বিল নিয়ে অনেক সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সেগুলির মধ্যে যে সুপারিশগুলি গৃহীত হয়েছে সেগুলি অন্তর্ভুক্ত করে সংসদে নতুন বিল পেশ করছে সরকার। প্রত্যাহার করা হবে আগের বিলগুলি। আগামিকাল নতুন বিল পেশ করবে সরকার। বিরোধীরা ফের এই বিলগুলি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি করবেন।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিলে পরকীয়াকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা ও সম্মতি ছাড়া সমকামী সম্পর্ককে অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই বিলে সম্মতি দিলেও স্থায়ী কমিটির এই সুপারিশ খারিজ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর দফতরের আপত্তিতেই এই সুপারিশ খারিজ হয়ে গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পরে সংসদের চলতি অধিবেশনেই ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম বিল পেশ করতে চলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ভারতীয় দণ্ডবিধি, ফৌজদারি দণ্ডবিধি ও সাক্ষ্য নিয়ম বদলে মোদী সরকার ন্যায় সংহিতা, নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও সাক্ষ্য অধিনিয়ম চালু করতে চাইছে। এই তিনটি বিল সংসদের স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল। ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারায় বলা ছিল, কোনও ব্যক্তি বিবাহিত মহিলার সঙ্গে তাঁর স্বামীর অনুমতি ছাড়া সম্পর্ক স্থাপন করলে পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল, জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে। পাঁচ বছর আগে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ওই ধারা মহিলাদের প্রতি অসম্মানজনক। পরকীয়ার অভিযোগে শুধু পুরুষকে শাস্তি দেওয়া আদপে মহিলাদের পুরুষের সম্পত্তি বলে ধরে নেওয়া। ৪৯৭ ধারা অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়, পরকীয়া বা বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ফৌজদারি অপরাধ নয়। কিন্তু পরকীয়াকে ফের ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করার সুপারিশ করেছিল স্থায়ী কমিটি। যুক্তি ছিল, ভারতীয় সমাজে বিবাহের বন্ধন পবিত্র বলে ধরা হয়। একে রক্ষা করা এবং ধারাটিকে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ
রাখা প্রয়োজন।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা খারিজ করে পাঁচ বছর আগে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, উভয়ের সম্মতি সাপেক্ষে সমকামিতা অপরাধ নয়। স্থায়ী কমিটি পুরুষ, মহিলা, রূপান্তরকামীদের সঙ্গে সম্মতি-ছাড়া যৌন সংসর্গ এবং পশুকামিতা প্রতিরোধের জন্য কোনও ধারা থাকছে না বলে ৩৭৭ ধারায় সম্মতি-ব্যাতিরেকে যৌন সংসর্গের দণ্ড বিধান করার সুপারিশ করেছে। সংবাদমাধ্যমটির দাবি, এই দুই ধারা যোগ হলে তা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধী বলে মনে হত, ফের মামলা মোকদ্দমা হত ভেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই সুপারিশ অমান্য করার
সিদ্ধান্ত নিয়েছে।