সায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের

শিলচর স্টেশনের নাম বদলে ভাষাশহিদ

নতুন লাইন পেল, নতুন ট্রেনও আসতে চলেছে। এ বার বরাকের আবেগ ঘেরা ভাষা আন্দোলনও কেন্দ্রীয় সরকারি ‘স্বীকৃতি’ পেতে চলেছে। শিলচর রেল স্টেশনের নাম ‘ভাষাশহিদ’ করার দাবি দীর্ঘ দিনের। এতদিন বিষয়টিকে স্রেফ ‘আঞ্চলিক’ বলে বার বার খারিজ করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এ বার শিলচরকে ‘ভাষাশহিদ স্টেশন’ করার ব্যাপারে তাদের যে আপত্তি নেই তা জানিয়ে রেল মন্ত্রকে ফাইল পাঠিয়ে দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৫১
Share:

নতুন লাইন পেল, নতুন ট্রেনও আসতে চলেছে। এ বার বরাকের আবেগ ঘেরা ভাষা আন্দোলনও কেন্দ্রীয় সরকারি ‘স্বীকৃতি’ পেতে চলেছে। শিলচর রেল স্টেশনের নাম ‘ভাষাশহিদ’ করার দাবি দীর্ঘ দিনের। এতদিন বিষয়টিকে স্রেফ ‘আঞ্চলিক’ বলে বার বার খারিজ করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এ বার শিলচরকে ‘ভাষাশহিদ স্টেশন’ করার ব্যাপারে তাদের যে আপত্তি নেই তা জানিয়ে রেল মন্ত্রকে ফাইল পাঠিয়ে দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানিয়েছেন, ‘‘নাম বদলের ব্যাপারে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আমরা তা রেল মন্ত্রককে জানিয়ে দিয়েছি। এ বার বিষয়টি রেল মন্ত্রকের বিবেচনার বিষয়।’’

Advertisement

এর আগে রাজ্য সরকার ও রেল মন্ত্রক স্টেশনের নাম বদলে তাদের যে আপত্তি নেই তা জানিয়ে দেয়। কিন্তু তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম প্রস্তাবটি খারিজ করে দেন। তাঁর যুক্তি ছিল, বাংলা ভাষার জন্য ১১ জনের প্রাণদান একেবারেই আঞ্চলিক বিষয়। এমন ব্যাপারে স্টেশনের নাম বদলানো যায় না। চিদম্বরমের এই সিদ্ধান্তে বরাকে, বিশেষ করে শিলচরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিক্ষোভ, মিছিল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুতুল দাহের মতো ঘটনা চলে বেশ কিছুদিন ধরে।

১৯৬০ সালে অসমে অসমীয়াকে একমাত্র সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করলে বরাক জুড়ে প্রতিবাদ হয়। এরই অঙ্গ হিসেবে ১৯৬১-র ১৯ মে শিলচর রেলস্টেশনে সত্যাগ্রহ পালিত হয়। পুলিশ সেখানে গুলি চালালে ১১জন তরুণ-তরুণী প্রাণ হারান। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শিলচর রেল স্টেশনের নামবদলের দাবি তোলে ভাষাশহিদ স্মরণ সমিতি। পরে সেই দাবিকে সমথর্ন জানায় বিভিন্ন সংগঠন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চ একে লাগাতার সংগ্রামের চেহারা দেয়। রেল মন্ত্রক রাজ্য সরকারের মতামত জানতে চায়। মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ নিজে ও রাজ্য সরকার রেল মন্ত্রককে চিঠি পাঠিয়ে তাদের সম্মতির কথা জানায়। পরে ফাইল যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। চিদম্বরম তা খারিজ করেন। পরে সুশীলকুমার সিন্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলে শিলচরের এক প্রতিনিধি দল দিল্লি গিয়ে তাঁর সঙ্গে আবার দেখা করেন। সিন্ধে ফের রাজ্য সরকারের মতামত জানতে চান। রাজ্য সরকার আবার সম্মতি জানিয়ে চিঠি পাঠায়। ততদিনে ফের বদলে গিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর মঞ্চের প্রতিনিধিদল দেখা করেন রিজিজুর সঙ্গে। সাংসদ সুস্মিতা দেবও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে এই দাবি পূরণের জন্য অনুরোধ করেন।

Advertisement

ভাষাশহিদ স্মরণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজীব কর বলেন, ‘‘সকলের মিলিত প্রয়াসেই আমাদের দাবি পূরণ হতে চলেছে। রেলমন্ত্রক আগেই তাদের আপত্তি নেই জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি লিখেছিল। ফলে আর জটিলতার জায়গা নেই। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement