ভারত-মায়ানমার আন্তর্জাতিক সীমান্তের উভয় দিকে ১৬ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারীদের এপার ওপার হতে কোনও ভিসা লাগে না ছবি: সংগৃহীত।
ভারত-মায়ানমার আন্তর্জাতিক সীমান্তের উভয় দিকে ১৬ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারীদের এপার ওপার হতে কোনও ভিসা লাগে না। দুই দেশের সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারেই ‘ফ্রি মুভমেন্ট রেজিম’-এর সুবিধে দেওয়া হয়েছে৷ মণিপুর মন্ত্রিসভা ওই বিশেষ সুযোগ একেবারে প্রত্যাহার করে নিতে কেন্দ্রকে
আর্জি জানিয়েছে।
শান্তি ফিরে আসছে বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ আজ চার মাস পরে রাজ্যে ফের মোবাইল ইন্টারনেট সেবা চালুর কথা ঘোষণা করেন৷ গত এক মাসে তেমন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, এই মন্তব্য করে তিনি অনুপ্রবেশের ব্যাপারে সকলকে সতর্ক করে দেন৷ বলেন অনুপ্রবেশকারীদের দিকে কড়া নজর রাখতে হবে৷ দু’দেশের সীমান্তের ভিতরে ১৬ কিলোমিটারের মধ্যে সেই মুক্ত চলাচলের শাসনপ্রণালী বা ‘ফ্রি মুভমেন্ট রেজিম’-এর উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই বিশেষ সুযোগ প্রত্যাহার করতে হবে৷ এ ব্যাপারে রাজ্য মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়েছে৷ মায়ানমারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্তের ৬০ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও মু্খ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন৷ বিআরও-কে এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে মন্ত্রী এল হাওকিপের নেতৃত্বে একটি সাব-কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া, মণিপুরে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এই কাজ এই মাসেই শেষ করতে কেন্দ্র নির্দেশ দিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন সচিবালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, গুজব ঠেকাতে এবং ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়া রুখতে হিংসার শুরুতেই মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল৷ এখন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক৷ তাই ইন্টারনেট পরিষেবা ফের চালু করা হয়েছে৷ তাঁর এই সিদ্ধান্তে জনমনে সন্তোষ দেখা দিয়েছে৷ নেট ব্যবহার করেই তাঁরা সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন৷ অনেকে লিখেছেন, এত দিনে ছন্দে ফিরল মণিপুর৷ কারও মন্তব্য, এ যেন আর এক স্বাধীনতার ছোঁয়া।
আফিম চাষের বিরুদ্ধে অভিযানে নামতেই কুকি জঙ্গিরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিল, হিংসাপর্বে বারবার এই কথা বলেছেন বীরেন সিংহ৷ এর রেশ ধরেই এ দিন তিনি জানান, আফিম চাষের বিরুদ্ধে তাঁর সরকার অভিযান তীব্রতর করবে৷ সে জন্য নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বুরো এবং
নার্কোটিক্স অ্যান্ড অ্যাফেয়ারস অব বর্ডারকে নিয়ে যৌথ কমিটি তৈরি করা হয়েছে৷
এ দিকে, মণিপুরে অস্থিরতা সৃষ্টির মাধ্যমে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে এম আনন্দ সিংহকে গ্রেফতার করে ইম্ফল থেকে দিল্লিতে নিয়ে গেল এনআইএ৷ মায়ানমারের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর সঙ্গেও তার সম্পর্ক রয়েছে বলে অনুমান করছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাটি৷ পুলিশের অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্রশস্ত্র লুটের অভিযোগে মণিপুর পুলিশ যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল, আনন্দ তাদেরই এক জন৷ শুক্রবার আদালত সকলকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিলেও পুলিশ এনআইএ-র মামলায় আনন্দকে ফের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায়৷ এর পরেই শনিবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়।