—প্রতীকী চিত্র।
অনলাইন গেমিং সংস্থাগুলির উপর কর চাপানোর বিষয়ে অনড় থাকল জিএসটি পরিষদ। জিএসটি পরিষদের বৈঠকে অনলাইন গেমিংয়ে ২৮ শতাংশ কর চাপানো নিয়ে প্রথম থেকেই দিল্লির অরবিন্দ কেজরীওয়াল সরকারের আপত্তি ছিল। একই ভাবে ক্যাসিনো থেকে কর আদায় নিয়ে গোয়ার সরকারের বিরোধিতা ছিল। তা সত্ত্বেও ১ অক্টোবর থেকে অনলাইন গেমিংয়ে ২৮ শতাংশ কর চাপানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু তার আগেই বিভিন্ন অনলাইন গেমিং সংস্থার কাছে প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকার বকেয়া জিএসটি মেটানোর নির্দেশ গিয়েছে।
আজ জিএসটি পরিষদের বৈঠকে দিল্লির মন্ত্রী অতিশী অভিযোগ তোলেন, অনলাইন গেম শিল্পের রাজস্ব আয়ই হল ২৩ হাজার কোটি টাকা। যদি তাদের দেড় লক্ষ কোটি টাকার করের নোটিস পাঠানো হয়, তা হলে শিল্পই নষ্ট হয়ে যাবে। বিদেশি লগ্নিকারীদের কাছে কাছে বার্তা যাবে এখানে লগ্নি করা ঝুঁকিপূর্ণ। যখন তখন নিয়ম বদল হলে বিদেশি লগ্নিকারীরা কেন ভারতের স্টার্ট-আপে লগ্নি করবে?
কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক অবশ্য এখনকার করের হার ধরে অতীতের কর আদায় দাবি করা হচ্ছে বলে মানতে চাননি। অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য, অক্টোবর থেকেই ২৮ শতাংশ হারে জিএসটি মেটাতে হবে। কিন্তু আগের কর বাকি থাকলে তা মেটাতে হবে। পশ্চিমবঙ্গের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও বৈঠকে সওয়াল করেছেন, আগে কেউ কর ফাঁকি দিয়ে থাকলে তাকে ডিজিজিআই (ডিরেক্টর জেনারেল অব জিএসটি ইন্টেলিজেন্স) নোটিস পাঠাতেই পারে।
পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের দাবি মেনে আজ কেন্দ্রীয় সরকার মদ বা অ্যালকোহল তৈরির কাঁচামাল ইএনএ বা এক্সট্রা-নিউট্রাল অ্যালকোহলে জিএসটি চাপানোর অধিকার ছেড়ে দিয়েছে। অ্যালকোহলের মতো এ ক্ষেত্রেও রাজ্যই ইচ্ছে মতো কর বসাতে পারবে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, ইলাহাবাদ হাই কোর্টের রায়, অ্যাটর্নি জেনারেলের মত সত্ত্বেও কেন্দ্র রাজ্যের হাতে এই ক্ষমতা তুলে দিচ্ছে। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত। জিএসটি ক্ষতিপূরণ সেস আদায় করে কোভিডের সময় নেওয়া ঋণ ও সুদ মেটানো হয়ে গেলে তা অন্য কোনও কোনও কাজে লাগানো যায় কি না, তা নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সীতারামন। তবে রাজ্যগুলির জন্য ক্ষতিপূরণের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।
জিএসটি পরিষদ আজ গুড়ে জিএসটি ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে চিনি কল মালিকদের হাতে বাড়তি টাকা থাকবে। আখ চাষিদের বকেয়া দ্রুত মেটানো যাবে। আখের খড় থেকে পশুখাদ্য তৈরির খরচও কমবে। মিলেট থেকে ময়দা, যেখানে মিলেটের ভাগ ৭০ শতাংশ, সেই ময়দায় জিএসটি-র হার হবে শূন্য। ব্র্যান্ডেড প্যাকেটবন্দি ময়দা হলে ৫ শতাংশ জিএসটি চাপবে।
আজ জিএসটি পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কোনও সংস্থা তার শাখা সংস্থার হয়ে ব্যাঙ্ক ঋণে কর্পোরেট গ্যারান্টি দিলে তাতে ১৮% জিএসটি চাপবে। যদি কোনও সংস্থার ডিরেক্টর ব্যক্তিগত গ্যারান্টি দেন, তা হলে জিএসটি চাপবে না। জিএসটি আপিল ট্রাইব্যুনালে সভাপতি ও সদস্যদের বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো হয়েছে। দশ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে পঞ্চাশোর্ধ্ব আইনজীবীরা ট্রাইব্যুনালে যোগ দিতে পারবেন।