অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
আবেদন করার পোর্টাল ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, এক বার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর ধারা তৈরি হয়ে গেলেই ওই পোর্টালে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন প্রতিবেশী দেশ থেকে ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে পালিয়ে আসা ব্যক্তিরা।
গত কাল সিএএ-র ধারা তৈরির সময়সীমা শেষ হওয়ায়, ফের প্রক্রিয়াগত কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে ধারা তৈরির মেয়াদ ছ’মাস বৃদ্ধিতে সিলমোহর দিয়েছে সংসদীয় সচিবালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অবশ্য জানাচ্ছে, আসন্ন বাজেটে অধিবেশনে ওই আইনের ধারায় সংসদীয় সিলমোহর পড়ে যাবে। যাতে লোকসভা নির্বাচনের আগে নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজশুরু করা যায়।
২০১৯ সালে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে সিএএ পাশ করায় নরেন্দ্র মেদী সরকার। ওই আইনানুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মালম্বী দেশ থেকে যদি সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় চান, তা হলে তা দেবে ভারত।
গত কাল ওই আইনের ধারা তৈরির জন্য সপ্তম বার সময়বৃদ্ধিতে সবুজ সংকেত দিয়েছে সংসদীয় সচিবালয়। যদিও এ যাত্রাতেও ওই ধারা হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান বিরোধীরা। বিজেপির মতে, ওই আইন রূপায়িত হলে বাংলার মতুয়া সমাজের নাগরিকত্ব পাওয়ার দীর্ঘ দিনের দাবি পূরণ হবে। তৃণমূলের পাল্টা, লোকসভা নির্বাচনের আগে নাগরিকত্ব দেওয়ার হাওয়া তুলে আসলে ভোট মরসুমে মতুয়া সমাজকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে পদ্ম শিবির। বিজেপি নেতৃত্ব খুব ভাল করেই ওয়াকিবহাল যে, লোকসভাভোটের আগে নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে এই বার্তা দিতে সক্ষম হলে, মতুয়া সমাজের যে ভোট দলের পিছন থেকে গিয়েছিল ফের তা ফিরে আসবে।
সূত্রের মতে, পশ্চিমবঙ্গের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি এই আইনের বিপক্ষে রয়েছে সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই গোটা প্রক্রিয়াটি রাজ্য সরকারের ভূমিকা ন্যূনতম করার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। ভাবা হয়েছে, নাগরিকত্ব পাওয়ার সামগ্রিক পরিকল্পনা অনলাইনের মাধ্যমে রূপায়ণের কথা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের মতে, একটি অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে ইচ্ছুকেরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারী কোন সালে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন, সেই তথ্য কেবল পোর্টালেদিতে হবে।
সূত্রের মতে, আবেদনকারীর কাছে কোনও কাগজপত্র চাওয়া হবে না। ওই আবেদন খতিয়ে দেখে নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। কিন্তু কবে থেকে ওই আবেদনের পোর্টাল চালু হবে তা স্পষ্ট করে জানায়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তবে সূত্রের মতে, বাজেট অধিবেশনেই ওই আইনের ধারা সংসদে পেশ হবে। সংসদের ছাড়পত্র পেলেই ওই পোর্টাল চালু করে দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত আদৌও বাস্তবে কতটা নাগরিকত্বআইন রূপায়িত হবে তা নিয়ে সংশয়ে তৃণমূল। দলের বক্তব্য, আইনের ওই ধারা ভোটের আগে তৈরি হলেও, জনগণকে সেই আইনের সুবিধা পেতে লোকসভা নির্বাচন গড়িয়ে যাবে। ক’দিন গেলেই মানুষ নিজে থেকেই বুঝতে পারবেন গোটাটা বিজেপির ভাঁওতা ও মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছু নয়।