ক্যালেন্ডারে শীত এলেও সে ভাবে দেখা নেই শীতের। আবহাওয়া দফতরের মতে, রাজ্যে শীত জাঁকিয়ে না পড়তে পারার নেপথ্যে ভিলেন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে তৈরি গভীর নিম্নচাপ ‘পেতাই’। ইতিমধ্যেই পেতাইয়ের প্রভাবে ধস নেমে বিজয়ওয়াড়ায় এক ব্যক্তির মৃত্যুও হয়েছে। এই মুহূর্তে ঠিক কী অবস্থা পেতাইয়ের?
অন্ধ্রে পূর্ব গোদাবরী উপকূলে আছড়ে পড়ল পেতাই। ঘণ্টায় এর বেগ ৮০-৯০ কিমি। অন্ধ্রের সাতটি ও পুদুচেরির একটি জেলায় এখনও জারি রেড অ্যালার্ট। ঝোড়ো হাওয়া বইছে দক্ষিণ ওড়িশা উপকূলেও। সোমবার সকালেও এই ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ ছিল অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জেলার কাঁকিনাড়া ও বিশাখাপত্তনম বন্দরের দিকে।
তাইল্যান্ড এই ঝড়ের নাম দিয়েছে ‘পেতাই’। প্রতি ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার বেগে কাঁকিনাড়া বন্দরের দিকে এগিয়ে চলেছিল পেতাই। কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী উপকূলবর্তী অঞ্চলেও এর জেরে দুর্যোগ জারি থাকবে। ইতিমধ্যেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের নানা জেলায়।
৭৭ তম ঘূর্ণিঝড় হিসাবে অন্ধ্রের উপকূলে আছড়ে পড়ল পেতাই। তবে আবহবিজ্ঞানীদের ধারণা, স্থলভূমির যত কাছে আসছে তত শক্তি হ্রাস পাচ্ছে পেতাইয়ের।
পেতাই সামলাতে দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী ও নৌবাহিনীকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। মৎস্যজীবীদেরও এই দু’দিন গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। সেই রেড অ্যালার্ট কালকেও জারি থাকবে।
অন্ধ্রে ঢোকার পর সেটি ওড়িশার দিকে ঘুরে যাচ্ছে পেতাই। ওড়িশার গজপতি, গঞ্জাম, রায়গাড়া, কালাহান্ডিতে এলাকায় প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। পেতাইয়ের কথা ভেবেই অন্ধ্রপ্রদেশের উপর দিয়ে চলা ২২টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি ট্রেনকে। ট্রেন বাতিল ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মিলিয়ে চরম দুর্ভোগে যাত্রীরা।
কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় সোমবার বিকেল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সঙ্গে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান ও ঝাড়গ্রামে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। আগামী মঙ্গলবারও বৃষ্টি জারি থাকবে এই সব জেলায়।
মঙ্গলবার পেতাইয়ের শক্তিহ্রাসের ফলে দুর্যোগ কিছুটা কমলেও আবহাওয়া একই থাকবে। বরং বুধবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি ঘটবে বলে মত আবহবিদদের। সে দিন থেকেই জাঁকিয়ে শীত পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজ্যের তাপমাত্রা একধাক্কায় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমে যেতে পারে। ছবি: এএফপি ও আইস্টক।