প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই
স্বাধীনতার সময়ে বল্লভভাই পটেল এ দেশের প্রধানমন্ত্রী হলে আজ দেশের পরিস্থিতি ভিন্ন হত বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ পটেলের ১৪৭তম জন্মদিবসে দিল্লির সর্দার পটেল বিদ্যালয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পটেল হলে দেশকে এত সমস্যার সম্মুখীন হতে হত না।’’
সীমান্তে চিন-পাকিস্তান সমস্যা। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রাপ্তির মতো বিতর্কিত বিষয়গুলির জন্য গোড়া থেকেই দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহওরলাল নেহরুকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে এসেছে বিজেপি। দেশভাগের জন্যও কার্যত নেহরুকেই নিশানা করে থাকেন বিজেপি নেতৃত্ব। নরেন্দ্র মোদী ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই স্বাধীনতার পরে ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ার ক্ষেত্রে নেহরুর চেয়ে গুজরাতের ভূমিপুত্র তথা দেশের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভভাই পটেলকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কৌশল নিয়েই এগিয়েছে। বিজেপি নেতৃত্ব মনে করেন, সে সময়ে নেহরুর পরিবর্তে পটেলের হাতে ক্ষমতা থাকলে ভারতের আজকের ছবি অন্য রকম হত। অন্য দিকে বিরোধীদের অভিযোগ, আইকনের অভাব থাকায় কংগ্রেসের নেতাকে কেড়ে নিয়ে নিজেদের নেতা হিসেবে তুলে ধরতে বাধ্য হয়েছেন মরিয়া মোদী-শাহেরা। যদিও বিজেপি নেতৃত্ব ভুলে গিয়েছেন, পটেলই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এক সময়ে জনসঙ্ঘকে দেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন।
সামনেই গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচন। আজ গুজরাতি অস্মিতাকে কৌশলে উস্কে দিয়ে অমিত শাহ পটেলের জন্মদিবসে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ‘‘দেশের জনগণের মধ্যে বড় অংশ মনে করেন, ভারতের স্বাধীনতার সময়ে যদি পটেল দেশের প্রধানমন্ত্রী হতেন সে ক্ষেত্রে দেশকে আজ যে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে তা হত না।’’ আজ নাম না করে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেহরুর সমালোচনার পাশাপাশি ঘুরিয়ে কংগ্রেসের সমালোচনায় সরব হন শাহ। তিনি বলেন ‘‘স্বাধীনতার পরে এক-এক করে প্রায় পাঁচশোর মতো করদ রাজ্য ভারতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল পটেলের কারণে। লাক্ষাদ্বীপ, আন্দামান নিকোবর, জুনাগড়, হায়দরাবাদ এমনকি কাশ্মীরও ভারতে যুক্ত হয়েছিল পটেলের চেষ্টায়।’’ স্বাধীনতার পরে শক্তিশালী ভারত গড়ে তোলার সঙ্গেই গণতান্ত্রিক ভাবে দেশকে শক্তিশালী করার পিছনে পটেলের যথেষ্ট অবদান ছিল বলে দাবি করেন শাহ। তাঁর দাবি, ‘‘ভারতের সংবিধান রচনার ক্ষেত্রেও পটেলের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। পটেলই সেই ব্যক্তি যিনি সংবিধান প্রণয়নের দায়িত্ব ভীমরাও অম্বেডকরকে নিতে অনুরোধ করেছিলেন।’’ একই সঙ্গে শাহের অভিযোগ, কিন্তু একটি সময়ে সেই পটেলের ভূমিকা ভারতের ইতিহাস থেকে মুছে দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত ভাবে চেষ্টা করা হয়েছিল। রাজনীতিকদের মতে, পরোক্ষে এর পিছনে গান্ধী পরিবারের ভূমিকার দিকে আঙুল তুলেছেন শাহ।