গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ফের কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) বৃদ্ধির ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় সরকার। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা তিন শতাংশ হারে ডিএ বৃদ্ধিতে অনুমোদন দিয়েছে। প্রশাসনিক মহলে খবর, দীপাবলির আগেই এক দফা ডিএ বৃদ্ধির কথা ছিল কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জন্য। সেই ঘোষণা করা হল কোজাগরী লক্ষ্ণীপুজোর দিন। এর ফলে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা ৫৩ শতাংশ হারে ডিএ পাবেন। এত দিন তাঁরা ৫০ শতাংশ হারে ডিএ পেতেন। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বৃদ্ধির ফলে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে পার্থক্য বৃদ্ধি পেল অনেকটাই। এত দিন যে ব্যবধান ৩৬ শতাংশ ছিল, এখন তা বেড়ে ৩৯ শতাংশ হল। রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা এখন ১৪ শতাংশ হারে ডিএ পান।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে শেষ বার ডিএ বৃদ্ধি হয়েছিল রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের। সেই বার ৪ শতাংশ হারে ডিএ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। গত বছরের ডিসেম্বরে পার্কস্ট্রিটে বড়দিনের উৎসবের উদ্বোধনে গিয়ে এপ্রিল মাস থেকে ডিএ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘ দিন ধরেই কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করছে বিভিন্ন সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন। সরকারি কর্মচারীদের সম্মিলিত সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ ডিএ-র দাবি নিয়ে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়-সহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের দ্বারস্থ হয়েছে। ডিএ-র দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের করা মামলারও এখনও নিষ্পত্তি হয়নি সুপ্রিম কোর্টে। সেই আবহে আবারও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণায় ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছে।
ডিএ বৃদ্ধির পর রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে কো-অর্ডিনেশন কমিটির পক্ষে বিজয়শঙ্কর সিন্হা বলেন, ‘‘বেপরোয়া ভাবে সরকার আমাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করছে। শারদীয়ার ছুটির পরেই আমরা সরাসরি সংঘাতে যাব।’’
এ প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের সঙ্গে অধিগৃহীত সংস্থার কর্মচারীদের এই সরকার প্রায় পথে বসিয়ে দিয়েছে। ক্ষমতায় আসার আগের তৎকালীন বিরোধী নেত্রী এবং বর্তমানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ওঁদের ক্ষমতায় আনলেই সরকারি কর্মচারীদের সব কিছুই কেন্দ্রীয় সরকারি হারে দেওয়া হবে। কিন্তু এখন দেখছি, আমাদের ন্যায্য পাওনা চাইতে গেলেই উনি বলছেন, ঘেউ ঘেউ করবেন না।’’
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্য় সরকারি কর্মচারীদের জীবনের অন্ধকার আরও ঘন হল। বিশেষ করে যারা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী রয়েছেন, তাদের অবস্থা আরও শোচনীয় হল। ডিএর ব্যবধান দিন প্রতিদিন বাড়ছে। তাই আমরা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। পুজোর ছুটি শেষ হলেই আমাদের অবস্থান স্পষ্ট হবে।’’
তবে সরকারের পক্ষ নিয়ে শাসকদলের সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক প্রতাপ নায়েক বলেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর উপর আস্থা রাখছি। সকলেই জানি যে, কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গকে কী ভাবে বঞ্চিত করে চলেছে। তা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী কখনও বলেননি যে ডিএ দেবেন না। সময় হলেই মুখ্যমন্ত্রী ডিএ-র ঘোষণা করবেন। এ ক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে সংঘাতে যাওয়া উচিত হবে না।’’