মানবাধিকার নেই জঙ্গিদের: কেন্দ্র

গত পাঁচ বছরে সন্ত্রাস মোকাবিলায় কড়া দমননীতি নিয়ে এগোচ্ছে কেন্দ্র। বেশ কিছু ক্ষেত্রে জঙ্গি দমনের নামে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে সরকারের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৯ ০৩:৪৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

নরেন্দ্র মোদীর সরকার মনে করে, কোনও জঙ্গি অথবা যৌন অপরাধীর মানবাধিকার নেই। লোকসভায় আজ মানবাধিকার রক্ষা (সংশোধনী) বিলের বিতর্কে অংশ নিয়ে সরকারের এই মনোভাবের কথা জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। যদিও বিতর্কে বিরোধীরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে কেন্দ্রকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, মানবাধিকারের কথা বললেও সরকার মানবাধিকার কর্মীদের হেনস্থা এবং গ্রেফতার করছে।

Advertisement

গত পাঁচ বছরে সন্ত্রাস মোকাবিলায় কড়া দমননীতি নিয়ে এগোচ্ছে কেন্দ্র। বেশ কিছু ক্ষেত্রে জঙ্গি দমনের নামে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে সরকারের বিরুদ্ধে। কিন্তু কেন্দ্র বার বার জানিয়েছে, সন্ত্রাস এবং জঘন্য ধরনের অপরাধের মোকাবিলায় কোনও শৈথিল্য দেখানো হবে না। আজও বিরোধীদের জবাব দিতে গিয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, জঙ্গি ও যৌন অপরাধীদের মানবাধিকার রয়েছে বলে মনে করে না সরকার। তবে যারা সন্ত্রাস ও যৌন অপরাধের শিকার, সরকার তাদের পাশে রয়েছে।

বিলটি গত সপ্তাহে লোকসভায় পেশ হয়েছিল। বিতর্কে আজ বিরোধীরা একযোগে নিশানা করেন শাসক শিবিরকে। আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিংহ ও তাঁর স্বামী আনন্দ গ্রোভারের বাড়ি ও দফতরে সম্প্রতি হানা দিয়েছিল সিবিআই। সেই প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেসের শশী তারুরের অভিযোগ, মানবাধিকার সংক্রান্ত একাধিক মামলা লড়ার ‘অপরাধে’ কয়েক বছর ধরে সরকারের নিশানায় রয়েছেন তাঁরা। তাই ওই দম্পতিকে হেনস্থা করতেই গোয়েন্দা লাগানো হয়েছে, বাড়ি-দফতরে তল্লাশি চালানো হয়েছে। তারুরের কথায়, ‘‘আমরা যখন মানবাধিকারকে আরও শক্তিশালী করার জন্য সংসদে আলোচনা করছি, তখন দিন কয়েক আগেই আন্তর্জাতিক জুরি কমিশন আইনজীবী তথা মানবাধিকার কর্মী জয়সিংহ ও গ্রোভারের বাড়িতে হানা দেওয়ার নিন্দায় সরব হয়েছে। ওই দু’জন সমাজের দুর্বল মানুষের অধিকার রক্ষার প্রশ্নে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব।’’ বিরোধীদের মতে, সম্ভবত সেটাই অপছন্দ শাসক শিবিরের।

Advertisement

আলোচনায় একাধিক সাংসদ মানবাধিকার কর্মী সুধা ভরদ্বাজের গ্রেফতারি প্রশ্নে সরব হন। তারুরের মন্তব্য, ‘‘সরকার ঋণখেলাপিদের গ্রেফতার করতে ব্যর্থ। অথচ, মানবাধিকার রক্ষায় নিরলস কাজের জন্য যাকে হার্ভার্ড ল স্কুল সম্মান জানায়, সেই সুধা ভরদ্বাজকে বিমান থেকে নামিয়ে গ্রেফতার করে পুলিশ।’’ বিলে মানবাধিকার কমিশনের সময়সীমা পাঁচ থেকে কমিয়ে তিন বছর করা নিয়েও সমালোচনা করেন তৃণমূলের সৌগত রায়।

সরকার বিলে যে পরিবর্তন এনেছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল— এ যাবৎ মানবাধিকার কমিশনের প্রধান হতেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু অনেক বিচারপতিই ওই পদে বসতে অনিচ্ছুক থাকায় দীর্ঘ দিন চেয়ারম্যান পদ ফাঁকা থেকে যায়। সেই যুক্তি দেখিয়ে ওই নিয়ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

নিত্যানন্দ বলেন, ‘‘এ বার থেকে প্রধান বিচারপতি ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের যে কোনও বিচারপতিই চেয়ারম্যান হতে পারবেন।’’ একই সঙ্গে কমিশনে মানবাধিকার কর্মীর সংখ্যা দুই থেকে বাড়িয়ে তিন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সংশোধনীতে। কমিশনের সদস্য হবেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন অথবা তফসিলি জাতি-জনজাতি কমিশনের প্রধান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement