India

প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি হলে নামতে পারে নিষেধাজ্ঞা, ভারতকে প্রচ্ছন্ন হুমকি আমেরিকার

চিনের সঙ্গে ‘পাল্লা’ দিতে ভারতীয় বায়ুসেনা এবং নৌসেনার জন্য রাশিয়ার থেকে দেড়শোরও বেশি এস-৪০০ যুদ্ধবিমান কিনতে চায় ভারত সরকার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২১ ১৭:৪৪
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

রাশিয়ার থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা এস-৪০০ কিনলে জো বাইডেন সরকারের নিষেধাজ্ঞার কোপে পড়তে পারে ভারত। বাইডেন সরকারের প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনের ভারত সফরের আগে তাঁর কাছে এমনটাই নির্দেশ গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আমেরিকা যে এই চুক্তির ঘোরতর বিরোধী, লয়েডকে তা ভারত সরকারের কাছে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।

শুক্রবার বাইডেন সরকারের প্রথম প্রতিনিধি হিসাবে ভারতে আসছেন সে দেশের প্রতিরক্ষা সচিব। ওই সফরের আগেই কার্যত হুঁশিয়ারির সুর শোনা গিয়েছে আমেরিকার মুখে। সূত্রের দাবি, রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এই চুক্তির ফলাফল যে ভারতের পক্ষে গুরুতর হতে পারে, তেমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন আমেরিকার বৈদেশিক সম্পর্ক নিয়ে গঠিত কমিটির চেয়ারম্যান বব মেনেন্ডেজ। লয়েডের কাছে একটি চিঠিতে ওই সেনেটর জানিয়েছেন যে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আধিকারিকদের অবহিত করাতে হবে।

চিনের সঙ্গে ‘পাল্লা’ দিতে ভারতীয় বায়ুসেনা এবং নৌসেনার জন্য রাশিয়ার থেকে দেড়শোরও বেশি এস-৪০০ কিনতে চায় ভারত সরকার। যদিও লয়েডের সফরের আগে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সে চুক্তির সম্ভাবনা নেই। তবে আমেরিকা যে এই চুক্তির বিরোধিতা করছে, তা স্পষ্ট করার দায়িত্ব বর্তেছে লয়েডের কাঁধে। এই সফরে ভারত-আমেরিকার মধ্যে মূলত আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সুরক্ষা নিয়েই আলোচনা হওয়ার কথা। তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, আলোচনায় উঠে আসতে পারে রাশিয়ার থেকে ক্ষেপণাস্ত্ররোধী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার ভারতের পরিকল্পনাটিও। রাশিয়ার থেকে এস-৪০০ কেনার জন্য ইতিমধ্যেই তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। ভারতেরও যে একই হাল হতে পারে, তেমনটাই জানাতে উদ্যোগী হয়েছে বাইডেন প্রশাসন।

Advertisement

মেনেন্ডেজ তাঁর চিঠিতে লয়েডকে লিখেছেন, ‘যদি ভারত এস-৪০০ কেনার পরিকল্পনায় অগ্রসর হয়, তবে তা আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে। রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমেরিকার সিএএটিএসএ (কাউন্টারিং আমেরিকা’স অ্যাডভারসারিজ থ্রু স্যাংকসনস অ্যাক্ট) আইনের ২৩১ ধারা বলে ভারতের উপর ওই নিষেধাজ্ঞা বহাল করা যেতে পারে’।

ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রতিরক্ষা নিয়ে সম্প্রতি ইতিবাচক বৈঠকে মিলিত হয়েছিল ভারত, আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া— এই শক্তিধর রাষ্ট্র চতুষ্টয় বা কোয়াড। গত সপ্তাহে ওই ভার্চুয়াল বৈঠকে মূলত নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কৌশলগত আদানপ্রদান গভীর করাই লক্ষ্য বলে জানিয়েছিল ওই দেশগুলি। পাশাপাশি, ওই অঞ্চলে চিনের আধিপত্য কমাতে আগ্রহী আমেরিকা। চিনের থেকে যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে তারা, তা খর্ব করার ছাড়াও চিন বিরোধী জোট গড়ে তোলাও বাইডেন সরকারের লক্ষ্য। লয়েডের সফরে সে প্রচেষ্টাও তরান্বিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি হলে সে প্রচেষ্টা বাধা পেতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। মেনেন্ডেজ লিখেছেন, ‘(রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে) আমেরিকার সঙ্গে উন্নয়নমূলক কাজে অংশ নেওয়া-সহ সামরিক প্রযুক্তির সাহায্য পাওয়ার ব্যাপারেও ভারতের সুযোগ কমে আসবে’। লয়েডকে এ সমস্ত দিকগুলি ভারতের কাছে স্পষ্ট করে দিতে বলেছে আমেরিকা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement