চেন্নাকেশাভুলু। তেলঙ্গানা গণধর্ষণ কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত। ফাইল চিত্র।
তেলঙ্গানা খুন-ধর্ষণে অভিযুক্তদের পুলিশি ‘সংঘর্ষ’-এ মৃত্যু নিয়ে আজ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। আর এ দিনই ‘অবিচার’-এর বিরুদ্ধে নারায়ণপেট জেলায় রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখালেন নিহত অভিযুক্ত চেন্নাকেশবুলুর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রেণুকা।
তেলঙ্গানা খুন-ধর্ষণে অভিযুক্তদের পুলিশি ‘সংঘর্ষ’-এ মৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। গত কালই নারায়ণপেটে নিজেদের গ্রামের কাছে রাস্তায় ধর্নায় বসেন চেন্নাকেশবুলুর স্ত্রী রেণুকা ও মা জয়াম্মা। তাঁরা দাবি করেন, চার অভিযুক্তের দেহের গণসৎকার করার পরিকল্পনা করেছে পুলিশ। চেন্নাকেশবুলুর দেহ তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে। এ দিন রেণুকা বলেন, ‘‘অনেকে তো অন্যায় করে জেলে রয়েছে। তাহলে তাদেরও গুলি করে খুন করা উচিত। তা করা না হলে আমরাও দেহ সৎকার করব না। আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছে।’’
এ দিনও অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও এবং পুলিশের সমর্থনে রাস্তায় নেমে স্লোগান দিয়েছেন এক দল মানুষ। নিহত তরুণীর বাবাও ফের সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি আজ রাজ্যপালের কাছে পরিষদীয় দলনেতা এম ভাট্টি বিক্রমার্কের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল পাঠায় কংগ্রেস। রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকের পরে বিক্রমার্ক বলেন, ‘‘খুন-ধর্ষণের দিন ওই তরুণীর পরিবারকে অভিযোগ নিতে এক থানা থেকে অন্য থানায় ঘুরতে হয়েছিল। রাজ্যের এমন অবস্থা যে চন্দ্রশেখর রাওয়ের দলের নেতারা ফোনে বলে না দিলে পুলিশ অভিযোগও নেয় না। সে কথাই রাজ্যপালকে জানিয়েছি।’’ রাও সরকারের মন্ত্রী তালাসানি শ্রীনিবাস যাদব অবশ্য আজ খোলাখুলি বলেন, ‘‘কেউ অপরাধ করলে ভাববেন না জামিন পাবেন বা অনেক দিন মামলা চলার সুবাদে সুবিধা পাবেন। ও সব কিছু হবে না। এখন অন্যা করলেই এনকাউন্টারে নিকেশ করা হবে।’’
পুলিশি ‘সংঘর্ষ’-এর ঘটনা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করেছে মানবাধিকার কমিশন। কমিশনের ডিরেক্টর জেনারেল (তদন্ত)-কে এই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সরকারি সূত্রে খবর, আজ মেহবুবনগরের যে হাসপাতালে চার অভিযুক্তের দেহ রাখা হয়েছে সেখানে যায় কমিশনের দল। তেলঙ্গানা হাইকোর্টের নির্দেশে ওই চার জনের দেহ সেখানে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। চার জনের দেহ ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা আটটা পর্যন্ত সংরক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ময়না তদন্তের ভিডিয়ো তোলা হয়েছে। তা জমা দেওয়া হয়েছে মেহবুবনগরের প্রধান জেলা বিচারকের কাছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দলটি শাদনগরে যেখানে সংঘর্ষ হয়েছিল সেখানেও যায়। অন্য দিকে, সংঘর্ষে নিহত চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টা-সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশ।