তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও ফাইল চিত্র।
তেলের দাম হোক বা ধান চাষ— বিজেপির সঙ্গে সরাসরি সংঘাতের পথে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর)। কোনও রকম রাখঢাক না করেই রাজ্যের বিজেপি সভাপতি ও পদ্মশিবিরের অন্য নেতাদের ‘জিভ কেটে নেওয়া’র হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে কেন্দ্রের আবেদন উড়িয়ে দিয়ে কেসিআর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পেট্রল-ডিজ়েলের উপর থেকে তাঁর সরকার শুল্ক কমাবে না।
দিনকয়েক ধরে তেলঙ্গানার রাজনীতিতে শাসক-বিরোধী তরজার অন্যতম বিষয় হয়ে উঠছে ধান। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বন্দি সঞ্জয় লাগাতার বলে চলছেন, তেলঙ্গানার চাষিদের থেকে কেন্দ্র ধান কিনে নেবে। কেসিআর সরকার কৃষকদের ধান চাষে উৎসাহ দিচ্ছে না অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামার হুমকিও দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতারা। গত কাল এক সভায় এই বিষয়টির উল্লেখ করে রীতিমতো ক্ষোভে ফেটে পড়েন চন্দ্রশেখর। তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছি, আপনারা ধান কিনে নিন। মন্ত্রী জানিয়েছেন, সিদ্ধান্ত হলে তিনি আমাকে জানাবেন। আজ পর্যন্ত তিনি কিছু জানালেন না।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, গত বছর থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের কাছে প্রায় পাঁচ লক্ষ টন ধান রয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র কেনেনি। এর পরেই বন্দি সঞ্জয়ের প্রসঙ্গ তোলেন কেসিআর। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘কেন্দ্র বলছে ধান কিনব না, আর রাজ্যের বিজেপি নেতারা বলছেন কেন্দ্র ধান কিনে নেবে। এ সব বাজে কথা বলা বন্ধ করুন। আমাদের সম্পর্কে অপ্রয়োজনীয় কথা বললে জিভ কেটে নেব।’’ এখানেই থেমে থাকেননি তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘সঞ্জয় বলেছেন, উনি আমাকে জেলে পাঠাবেন। সাহস থাকলে ছুঁয়ে দেখুন।’’
এর পরেই বিজেপির বিরুদ্ধে ‘কৃষক হত্যা’র অভিযোগ তোলেন কেসিআর। তিনি বলেন, ‘‘আপনার তো কৃষকদের গাড়ি চাপা দিয়ে মারছেন। বিজেপির এক মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, কৃষকদের পিটিয়ে মারা উচিত।’’ তাঁর দাবি, কেন্দ্র অবিলম্বে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করুক। দিল্লি সীমানায় অবস্থানরত কৃষকদের পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী।
পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং রাজ্যগুলিকে শুল্ক কমানোর যে আবেদন কেন্দ্র জানিয়েছে, তার সমালোচনা করেছেন কেসিআর। তাঁর স্পষ্ট কথা, তেলঙ্গানা পেট্রল-ডিজ়েলের উপর থেকে শুল্ক কমাবে না। তাঁর যুক্তি, ‘‘আমরা তেলের উপর ভ্যাট বাড়াইনি। তেলের দাম এক পয়সাও বাড়াইনি, তা হলে বোকার মতো আমাদের দাম কমাতে বলা হচ্ছে কেন? যে বোকারা দাম বাড়িয়েছে. তারা দাম কমাক।’’ কেসিআরের দাবি, পেট্রল-ডিজ়েলের উপর থেকে সেস প্রত্যাহার করুক কেন্দ্র।
এ দিকে, পেট্রল-ডিজ়েলকে জিএসটি-র আওতায় আনার আর্জি জানিয়ে কেরল হাই কোর্টে একটি মামলা হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে হাই কোর্ট জিএসটি পরিষদকে নোটিস পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে ১০ দিনের মধ্যে উত্তর দিতে হবে বলেছে আদালত। জিএসটি পরিষদকে জানাতে হবে যে কেন পেট্রল-ডিজ়েলকে জিএসটির আওতায় আনা হয়নি।