প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের বিআরএস ও কংগ্রেসকে একই সঙ্গে আক্রমণ করবেন, তা জানাই ছিল। নরেন্দ্র মোদী তেলঙ্গানায় বিধানসভা ভোটের প্রচার শেষ করলেন তিরুমালায় বেঙ্কটেশ্বর স্বামীর মন্দিরে পুজো দিয়ে। মাথায় তিলক কেটে, ধুতি পরে মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানালেন, দেশের ১৪০ কোটি মানুষের সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করেছেন তিনি।
৩০ নভেম্বর তেলঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে ১১৯টি আসনে ভোটগ্রহণ। মঙ্গলবার প্রচারের শেষ দিন। কংগ্রেসের পরিকল্পনা ছিল, প্রচারের শেষ দিনে সনিয়া গান্ধী তেলঙ্গানায় জনসভায় করবেন। কারণ অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে তেলঙ্গানা রাজ্য গঠনের পিছনে সনিয়ার প্রধান ভূমিকা ছিল। কংগ্রেস মনে করছে, তেলঙ্গানায় ক্ষমতাসীন বিআরএস ও কংগ্রেস প্রায় সমানে সমানে লড়ছে। দুই দলের মধ্যে আসন সংখ্যায় বিশেষ ফারাক থাকবে না। শেষ বেলায় কংগ্রেস এগিয়েও যেতে পারে। সেই কারণেই সনিয়াকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা চলছিল। কিন্তু সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত সনিয়া গান্ধীর শারীরিক অসুস্থতার জন্য তাঁর প্রচার চূড়ান্ত হয়নি। সে ক্ষেত্রে মঙ্গলবার তেলঙ্গানার মানুষের কাছে ভিডিয়ো বার্তায় কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাবেন। সনিয়ার প্রচারে অনিশ্চয়তা থাকলেও সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তেলঙ্গানায় প্রচার শেষ করেছেন বিআরএস ও কংগ্রেসকে নিশানা করে। তাঁর অভিযোগ, দুই দলই তেলঙ্গানাকে লুট করে নিজেদের সিন্দুক ভরতে চায়।
বিআরএস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওকে ‘ফার্মহাউস সিএম’ বলে কটাক্ষ করেছেন মোদী। তাঁর বক্তব্য, অন্ধবিশ্বাসের কারণে জনতায় টাকায় তৈরি সরকারি সচিবালয়ে যাননি কেসিআর। গোটা রাজ্যের উপরে অন্ধবিশ্বাসের সিলমোহর লাগিয়ে দিয়েছেন। মোদী বলেন, ‘‘কেসিআর আমাকে আক্রমণ করেছেন। কারণ আমি ওঁকে এনডিএ-তে যোগ দিতে দিইনি।’’ তাঁর অভিযোগ, বিআরএস-এর নির্বাচনী প্রতীক গাড়ির চার চাকা ও স্টিয়ারিং ও কংগ্রেসের হাত চিহ্ন আসলে একই। দিনভর জনসভার পরে সন্ধ্যায় হায়দরাবাদে রোড-শো করেন মোদী। কংগ্রেস অবশ্য বলছে, মুখে যা-ই বলুন, মোদী-শাহের বিজেপি এবং আসাদুদ্দিন ওয়েইসি আসলে বিআরএস-কেই সাহায্য করছে। বিজেপি কোনওভাবেই চায় না তেলঙ্গানায় কংগ্রেস ভাল ফল করুক। রাহুল গান্ধী তাই তেলঙ্গানায় গিয়ে ‘বিজেপি-কে দো ইয়ার, ওয়াইসি অউর কেসিআর’ স্লোগান তুলেছেন। ওয়েইসির পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘রাহুলের বয়স ৫০। একাকীত্ব তাঁকে পীড়া দিচ্ছে নিশ্চয়ই। তবে একা থাকা আপনার সিদ্ধান্ত। আমরা কাউকে বিরক্ত করি না। তবে কেউ আমাদের বিরক্ত করলে ছেড়ে কথাও বলি না।’’ কংগ্রেস মনে করছে, বিআরএস-কে জেতাতেই বিজেপি ভোটের মেরুকরণ করতে চাইছে। বিআরএস সংখ্যালঘুদের ভোট টানতে শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক খোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর মোদী প্রচারে নামার আগে মন্দিরে ছুটছেন। নরেন্দ্র মোদী যখন তিরুমালা মন্দিরে পুজো দিতে ঢোকেন, সে সময়ে সেখানে দু’টি ভিডিয়ো ক্যামেরা, তিন জন চিত্রগ্রাহক ছিলেন। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘‘নির্বাচনী প্রচারে ছবি তোলার মাস্টার প্রভু বেঙ্কটেশ্বরকেও ছাড় দিলেন না। গোবিন্দ! গোবিন্দ!’’