ফাইল চিত্র।
নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার আধিবেশনকে কাজে লাগিয়ে আফগানিস্তানের তালিবান সরকার নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রচার চালিয়ে গিয়েছে নয়াদিল্লি। জি-২০ ভুক্ত দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। নয়াদিল্লির অবস্থান, এখনই তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি নয়।
আন্তর্জাতিক হাওয়া এখনও পর্যন্ত যে দিকে বইছে, তাতে সাউথ ব্লকের খুশি হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। রাশিয়া, তুরস্কের মতো তালিবানের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলা দেশও আজ জানাচ্ছে, তালিবান সরকারে আফগানিস্তানের সমস্ত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব যতক্ষণ না দেখা যাচ্ছে, তাকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না। সোমবার ইউরোপের অন্যতম শক্তিধর জার্মানিও জানিয়েছে, তালিবান প্রসঙ্গে ভারতের পাশে রয়েছে তারা। সে দেশ থেকে সন্ত্রাস যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে জন্য তারা নয়াদিল্লির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা করবে।
নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ওয়াল্টার জে লিন্ডার বলেছেন, “রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় পার্শ্ববৈঠকে দু’দেশের বিদেশমন্ত্রী আফগান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। সন্ত্রাসমুক্ত আফগানিস্তান জরুরি। এটাও জানি যে কোথা থেকে তালিবান এসেছে। ভারতের মতোই এই বিষয়টি নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। আফগানিস্তান নিয়ে আমাদের নিয়মিত আলাপ আলোচনা চলছে।”
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আফগানিস্তান নিয়ে ভারতের যা উদ্বেগ, তা অন্য কোনও দেশেরই নেই। কাবুলে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনের বাড়বাড়ন্ত হলে, ভারতে রক্তপাত হবে সবচেয়ে বেশি। তবে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় প্রথম বিশ্বের দেশগুলিও। রাশিয়া গোড়াতেই চিনের পথে হেঁটে তালিবান সম্পর্কে নরম মনোভাব নিলেও গত ১৫ অগস্টের পর থেকে তাদের অবস্থানের তারতম্য ঘটেছে। তালিবান যে ভাবে সরকার তৈরি করেছে তার যথেষ্ট সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে মস্কোকে। তালিবানের সরকার গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে সরব তুরস্কও। যা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। অথচ, তালিবান কাবুল দখল করার পর তুরস্কই হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিচালনার প্রস্তাব দিয়েছিল। তাতে এক দিকে যেমন তুরস্কের ব্যবসায়িক লাভ, অন্য দিকে, আমেরিকা-সহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে দর কষাকষির ক্ষেত্রেও সুবিধা। কিন্তু সম্প্রতি সে দেশের তরফে রাশিয়ার মতোই জানানো হয়েছে, যে ভাবে আফগানিস্তানে সরকার গঠন করা হয়েছে তাকে স্বীকৃতি দেওয়া যায় না। সে দেশে মহিলাদের অধিকার, সরকারে সমস্ত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে দেখা গিয়েছে ইস্তানবুলকে।