সোমবার টেগোর হিলের উপরে রবীন্দ্রজয়ন্তী করা যাবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ছবি সংগৃহীত।
কবির জ্যোতিদাদার স্মৃতি তার চতুর্দিকে ছড়ানো। কিন্তু তালাবন্ধ থাকায় রবি-স্মরণে উদ্যোগী রাঁচীর বাঙালিরা এ বার জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত সেই ‘টেগোর হিল’-এ ঢুকতেই পারলেন না।
বহু বছর ধরে টেগোর হিলে রবীন্দ্রজয়ন্তীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। গত দু’বছর করোনার জন্য সেখানে কবিপ্রণামের অনুষ্ঠান করা যায়নি। এ বার করোনা পরিস্থিতি ভাল থাকায় ফের রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠান করবেন বলে কিছু স্থানীয় শিল্পী রবিবার মহড়ার জন্য গিয়েছিলেন টেগোর হিলে। গিয়ে দেখেন, দরজা বন্ধ। ফলে, আজ, সোমবার টেগোর হিলের উপরে রবীন্দ্রজয়ন্তী করা যাবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
রাঁচীর কয়েক জন সংস্কৃতিকর্মী জানান, প্রতি বছরের মতো এ বারেও তাঁরা রবীন্দ্রজয়ন্তীর প্রাক্কালে টেগোর হিলে গিয়েছিলেন। ঠিক ছিল, বরাবরের মতোই টেগোর হিলের শান্তিধামের বারান্দায় বসে কিছু গান ও আবৃত্তি হবে। কিন্তু দরজা বন্ধ থাকায় তাঁরা পাহাড়ে উঠতেই পারেননি। রাঁচীর সাংস্কৃতিক কর্মী সুবীর লাহিড়ী বলেন, ‘‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। রবীন্দ্রজয়ন্তীর সময় রাঁচীর মানুষজনকে যথাযথ শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমরা ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।’’
রাঁচীর ঐতিহাসিক এই পাহাড়ে রবীন্দ্রনাথের দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ জীবনের বেশ কয়েকটা বছর কেটেছিল। এখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর নামেই এই পাহাড়ের নাম হয় টেগোর হিল। এই টেগোর হিল ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ হয় না বলে অভিযোগও উঠেছে বার বার। এমনকি কয়েক বছর ধরে এই টেগোর হিলে নানা রকম অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ উঠছে। কিন্তু রবীন্দ্রজয়ন্তীর সময় টেগোর হিল বন্ধ থাকার ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি বলেই জানাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা। এই দিনটায় বহু পর্যটকও জ্যোতিরিন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত পাহাড়ে ঘুরতে এসে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
কেন বন্ধ হল টেগোর হিল? সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, কয়েক দিন আগে টেগোর হিলে কিছু গন্ডগোল হয়। তাই প্রশাসনের তরফে মেন গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে রাঁচীর ডিসি ছবি রঞ্জনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।