ফাইল চিত্র।
হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের দেহের ময়নাতদন্তের ভিডিয়ো রেকর্ডিং হয়েছিল। ফলে তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে কোনও সংশয়ই থাকতে পারে না বলে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য পুলিশ যুক্তি দিল।
এই যুক্তির প্রেক্ষিতেই আজ সুপ্রিম কোর্ট দেবেন্দ্রনাথের মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবি আপাতত নাকচ করে দিয়েছে। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, কলকাতা হাইকোর্ট আগেই এই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। সেই রায় নিয়ে কারও আপত্তি থাকলে হাইকোর্টের উচ্চতর বেঞ্চে আবেদন জানানোর দরজাও খোলা রয়েছে।
গত বছরের ১৩ জুলাই একটি বন্ধ দোকানের সামনে উদ্ধার হয় দেবেন্দ্রনাথ রায়ের হাত বাঁধা ঝুলন্ত দেহ। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে তিনি কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন। ২০১৯-এ বিজেপিতে যোগ দেন। পুলিশ একে আত্মহত্যার ঘটনা বলে দাবি করেছিল। কিন্তু দেবেন্দ্রনাথের স্ত্রী চাঁদিমা সিবিআই তদন্তের আর্জি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট তাঁর আর্জি খারিজ করে দেয়।
এর পরেই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শশাঙ্কশেখর ঝা এবং গোয়ার সাংবাদিক স্যাভিও রডরিগজ় সিবিআই তদন্তের জন্য শীর্ষ আদালতে আর্জি জানান। তাঁদের অভিযোগ, দেবেন্দ্রনাথের মৃত্যুর পিছনে রাজনৈতিক হিংসা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে সিবিআই তদন্ত হোক। রাজ্য পুলিশের হয়ে আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা আজ বলেন, ‘‘হাইকোর্ট গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। মৃতের পরিবার হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। তাদের বক্তব্য হাইকোর্ট শুনেছে। ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে। ফলে মৃত্যুর কারণ নিয়ে সন্দেহ থাকতে পারে না। হাইকোর্ট বলেছে, খেলাচ্ছলে নিরপেক্ষ সংস্থাকে তদন্তের ভার তুলে দেওয়া যায় না।’’ রাজ্য প্রশাসন আগেই সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিল, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের অ্যাকাউন্ট থেকে হেমতাবাদের বিধায়কের মৃত্যুর ঘটনায় কিছু টুইট করা হয়েছিল। সিআইডি তদন্তে কী মিলেছে, তা না দেখেই ওই সব টুইট করা হয়। আর তার ভিত্তিতেই বিধায়ক মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অশোক ভূষণ মামলাকারীদের বলেন, আপনারা ফের হাইকোর্টে যেতে পারেন। মামলাকারী আইনজীবী শশাঙ্কশেখর ঝা যুক্তি দেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই দেবেন্দ্রনাথের স্ত্রী চাঁদিমা রায় সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। তার সঙ্গে জনস্বার্থ মামলাটিকে জুড়ে দেওয়া যায়। বিচারপতি ভূষণ বলেন, যখন সেই মামলা শুনানির জন্য আসবে, তখন দেখা যাবে। দেবেন্দ্রনাথ রায়ের স্ত্রী চাঁদিমা আজ বলেন, “স্বামীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে বিজেপির সহযোগিতায় ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে আমি কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। এক মাস আগে সুপ্রিম কোর্টে স্বামীর মৃত্যুর সিবিআই তদন্ত চেয়ে আবেদন করেছি।’’