সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
দেশ জুড়ে নানা রাজ্যেই সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে এক গাদা মামলা ঝুলে রয়েছে। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট সংশ্লিষ্ট হাই কোর্টগুলিকে নির্দেশ দিল, তারা যেন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলাগুলির দ্রুত বিচারের কাজে অগ্রণী হয়। হাই কোর্টের বিচারপতিদের এই মামলাগুলির নিষ্পত্তির ব্যাপারটা খতিয়ে দেখতে বলেছে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টে এ দিন একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলছিল। আবেদনকারী আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়ের তরফে বক্তব্য ছিল, সরকারি কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি এবং বিচারবিভাগের সদস্যদের যাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা ঝুলে রয়েছে, বিশেষ আদালত গঠন করে তার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা হোক। এক বছরের মধ্যে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করে দোষীদের আইনসভা, সরকার বা বিচারবিভাগের পদ থেকে সারা জীবনের মতো সরিয়ে দেওয়া হোক। ওই আবেদনে উল্লেখ করা হয়, হাই কোর্ট থেকে প্রাপ্ত নথি বলছে যে, বর্তমানে সারা দেশে সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে ৫১৭৫টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে ২১১৬টি মামলা পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে।
এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, এ ব্যাপারে অভিন্ন নির্দেশিকা তৈরি করা কঠিন। তবে যে রাজ্যে মামলাগুলি রয়েছে, সেই রাজ্যের হাই কোর্টগুলিকে এ ব্যাপারে তৎপর হতে বলেছেন তিনি। সংবিধানের ২২৭ নম্বর অনু্চ্ছেদ অনুযায়ী তাঁদের বিশেষ বেঞ্চ গড়তেও বলা হয়েছে। আবেদনের দ্বিতীয়াংশ, অর্থাৎ দোষীদের ভোটে প্রার্থী
হওয়া আটকানোর বিষয়টি নিয়ে শুনানি চলবে।
এই জনস্বার্থ মামলায় আবেদনকারীরা হাতিয়ার করেছেন সুপ্রিম কোর্টেরই ২০১৫ সালের একটি রায়কে। সেখানে বলা হয়েছিল, পদাসীন সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে যে সব মামলায় চার্জ গঠন হয়ে গিয়েছে, সেগুলির বিচার এক বছরের মধ্যে শেষ করতে হবে। যদি তা একান্তই না করা যায়, সে ক্ষেত্রে হাই কোর্টের বিচারপতির কাছে সে ব্যাপারে রিপোর্ট দিতে হবে। আবেদনকারীরা এই রায়ের কথা উল্লেখ করে আজ বলেছেন, খুব ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি ছাড়া এ ধরনের মামলায় যেন শুনানি মুলতুবি করা না হয়, সেটা যেন শীর্ষ আদালত দেখে। শীর্ষ আদালতের কাছে বিভিন্ন হাই কোর্ট থেকে ২০১৮-র ডিসেম্বর থেকে ২০২২-এর নভেম্বর পর্যন্ত যে নথি জমা পড়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, এই ধরনের ঝুলে থাকা মামলার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি উত্তর প্রদেশে। ২০১৮ সালে ওই রাজ্যে এই জাতীয় মামলার সংখ্যা ৯৯২, গত বছর সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৭৭। ৭১৯টি মামলা পাঁচ বছরের বেশি পুরনো। বিহারে ঝুলে আছে ৫৪৬টি মামলা, তার মধ্যে ৩৮১টি পাঁচ বছরের বেশি পুরনো।