তদন্ত নিশ্চিত করার পরামর্শ গুজরাত হাই কোর্টকে। —ফাইল ছবি
গুজরাতে মোরবীর সেতু বিপর্যয়কে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে দেশের শীর্ষ আদালত এই ঘটনার সঠিক তদন্ত নিশ্চিত করার পরামর্শও দিয়েছে গুজরাত হাই কোর্টকে।
মোরবীর সেতু বিপর্যয়ের ঘটনায় তদন্ত সুনিশ্চিত করতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছিল। সোমবার সেই সূত্রেই সেতু বিপর্যয় নিয়ে মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। গত মাসে মোরবীতে নদীর উপর ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা ১৩০-এর বেশি। মৃতদের মধ্যে ছিল ৪০ শিশুও। এই ঘটনা রীতিমতো সাড়া ফেলে দেয় গোটা দেশে। ইতিমধ্যে মোরবী বিপর্যয় নিয়ে মামলা চলছে গুজরাত হাই কোর্টে। সোমবার সেই মামলার বিষয়ে গুজরাতের উচ্চ আদালতকে পরামর্শ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, মোরবী সেতু বিপর্যয়ের তদন্তে যেন সব দিক খতিয়ে দেখা হয়, খুঁটিনাটি বিবেচনা করা হয়, তা নিশ্চিত করা উচিত গুজরাত হাই কোর্টের। কারণ এই ঘটনা ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’। সেই সঙ্গে, এই দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের যত বেশি সম্ভব ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়, তা-ও নিশ্চিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মোরবী নিয়ে যাঁরা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, তাঁদের আপাতত হাই কোর্টের বিচার প্রক্রিয়ার উপরেই ভরসা রাখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
মোরবীর সেতু বিপর্যয় নিয়ে চলতি মাসের শুরুতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছিল গুজরাত হাই কোর্ট। এই ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়ে ১০ দিনের মধ্যে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করা হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্টে একটি হলফনামা জমা দিয়ে দুর্ঘটনার দায় স্বীকার করে নিয়েছে স্থানীয় পুরসভা।
বস্তুত, দেড়শো বছরের পুরনো সেতুটি সংস্কার করেছিল ওরেভা নামের একটি সংস্থা। টেন্ডার না ডেকেই ওই সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছিল মোরবী পুরসভা। কেন তা করা হল, সেই প্রশ্ন তোলে হাই কোর্ট। অভিযোগ উঠেছে, ঝুলন্ত সেতুর পুরনো তার না বদলে মেঝেতে নতুন ধাতব পাত বসিয়েছে সংস্কারকারী সংস্থা। এর ফলে নতুন পাতের ভার রাখতে পারেনি পুরনো তারগুলি। ভেঙে পড়েছে সেতু। সেতুটি খোলা উচিত হয়নি বলে হাই কোর্টে দায় স্বীকার করে পুরসভা।
বিরোধীদের অভিযোগ, নির্ধারিত সময়ের আগেই সেতু জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার কারণেই বিপত্তি। এত মানুষের মৃত্যুর পরেও সংস্থার শীর্ষকর্তাদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ। ২৪ নভেম্বর গুজরাত হাই কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সে দিন মোরবী পুরসভার প্রধান সন্দীপসিংহ জালাকে উপস্থিত হওয়ার জন্য সমন পাঠিয়েছে হাই কোর্ট।