সুপ্রিম কোর্ট। — ফাইল চিত্র।
সংসদে বিল পাশ হয়ে আইনে পরিণত হওয়ার পরেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর হতে সময় লেগেছে প্রায় সাড়ে চার বছর। গত সোমবার ভারতে সিএএ কার্যকর হতে আবারও তার বিরোধিতায় সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এ বার সিএএ-র উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। আগামী ১৯ মার্চ সেই মামলার শুনানি রয়েছে শীর্ষ আদালতে।
শুক্রবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে আইনজীবী কপিল সিব্বল বিষয়টি উত্থাপন করেন। তার পরই বিচারপতি জানান, মামলাটি পরের সপ্তাহে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সাল থেকে এই আইনের বিরোধিতায় শতাধিক আবেদন দাখিল হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সিএএ পাশ করিয়েছিল কেন্দ্রের মোদী সরকার। ওই আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় চান, তা হলে তা দেবে ভারত। কিন্তু সিএএ-তে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি এবং খ্রিস্টান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও সেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্তদের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
প্রায় সাড়ে চার বছর আগে সংসদের উভয় কক্ষে পাশ হওয়ার পরে দেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও অনুমোদন দিয়েছিলেন সিএএ বিলে। কিন্তু এত দিন ধরে সিএএ কার্যকর করা নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। গত সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সিএএ কার্যকর করা জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
বিরোধীদের দাবি, সিএএ ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘বৈষম্যমূলক’। তাঁদের কথায়, কেন এই আইনে শুধু মাত্র ছয় সম্প্রদায়ের কথা বলা হল? কেন মুসলিম সম্প্রদায়কে বাদ দিয়ে এই আইন বানাল কেন্দ্র সরকার? বিরোধীদের কথায়, ভারত ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। সেখানে এ ধরনের আইন মানুষের মধ্যে ‘বৈষম্য’ সৃষ্টি করছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই এই আইনের বিরোধিতা করে আসছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সিএএ-র সঙ্গে এনআরসি-র সম্পর্ক রয়েছে। বর্ণবৈষম্যের সিএএ আমি মানি না।’’ যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, সিএএ এবং এনআরসি সম্পূর্ণ আলাদা। দু’টি বিষয়ের মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই। সিএএ শুধু নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। এর দ্বারা কোনও ভারতীয়ের নাগরিকত্ব বাতিল করা হবে না।