ছবি: সংগৃহীত।
পাল্টে গেল সুপ্রিম কোর্টের আদেশ।
বৃহস্পতিবারই ঘুষ মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের কাছে পাঠিয়েছিল বিচারপতি জে চেলামেশ্বরের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বেঞ্চ। বলেছিল, ওই বেঞ্চ গড়তে হবে সর্বোচ্চ আদালতের প্রবীণতম পাঁচ বিচারপতিকে নিয়ে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পরেই সেই রায় খারিজ করে দিল প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ। সেই বেঞ্চ জানিয়ে দিল, সুপ্রিম কোর্টে কোনও মামলা কোথায় যাবে, তা ঠিক করা প্রধান বিচারপতির দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এবং এই দায়িত্ব শুধু তাঁরই রয়েছে। দুই সদস্যের বেঞ্চ ওই মামলা সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে পাঠানোর আদেশ দিতে পারে না।
মূল মামলাটির ভিত্তি ছিল সুপ্রিম কোর্টে মেডিক্যালে ভর্তি সংক্রান্ত একটি মামলার রায়কে প্রভাবিত করার প্রতিশ্রুতি ও তার বিনিময়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ। ঘুষ কাণ্ডের তদন্তে সিবিআইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ওডিশা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ইশরাত মসরুর কুদ্দুসিকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। পরে তিনি জামিন পেয়ে যান। এই মামলায় সিবিআইয়ের উপর অনাস্থা প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের কোনও প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ‘সিট’ গড়ে তদন্তের আর্জি জানিয়েছিলেন আইনজীবী কামিনী জায়সবাল। তার পরেই গত কাল দুর্নীতির অভিযোগকে ‘অস্বস্তিকর’ আখ্যা দিয়ে মামলাটি সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠিয়েছিল বিচারপতি জে চেলামেশ্বর ও বিচারপতি এস আব্দুল নাজিরের বেঞ্চ। মেডিক্যালে ভর্তির মামলার শুনানি চলছিল বর্তমান প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। কামিনীর প্রতিনিধি, আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে তাই এই আর্জিও জানান, সাংবিধানিক বেঞ্চে যেন প্রধান বিচারপতি না থাকেন। তা নিয়ে অবশ্য কিছু বলেননি দুই বিচারপতি। তবে সব চেয়ে সিনিয়র পাঁচ বিচারপতিকে নিয়ে বেঞ্চ গড়ার আদেশ দিয়েছিলেন।
আজ বিকেল তিনটে নাগাদ প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ ওই আদেশ খতিয়ে দেখতে বসে। বিচারপতি আর কে অগ্রবাল, বিচারপতি অরুণ মিশ্র, বিচারপতি অমিতাভ রায়, বিচারপতি এ এম খানউইলকরের বেঞ্চ জানায়, দুই কিংবা তিন সদস্যের বেঞ্চ প্রধান বিচারপতিকে কোনও বিশেষ বেঞ্চ গঠন করতে বলতে পারে না। তাঁদের মতে, প্রধান বিচারপতি যে ভাবে কাজ বণ্টন করেন, তা আইনের নীতি, শৃঙ্খলা ও শালীনতা রক্ষা করেই হয়।
এই মামলায় প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণকে বলেন, সিবিআইয়ের করা দুর্নীতি মামলায় ভূষণ তাঁর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনছেন। প্রশান্ত এ দিন তাঁকে বলতে দেওয়া হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে ভরা এজলাস থেকে বেরিয়ে যান।