ফাইল চিত্র।
ইডির যাবতীয় ক্ষমতায় সিলমোহর দিয়ে মাত্র দু’টি ক্ষমতা নিয়ে ফের ভাবনাচিন্তা করতে রাজি হল সুপ্রিম কোর্ট।
গ্রেফতারি, তল্লাশি, সমন পাঠানো বা নগদ-সম্পত্তি আটকের ক্ষেত্রে মোদী সরকার ইডির হাতে যথেচ্ছ ক্ষমতা তুলে দিয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এর কোনও বিষয়েই আর পর্যালোচনা করতে নারাজ— মাত্র দু’টি ক্ষমতা বাদ দিয়ে। কাউকে গ্রেফতার করার আগে ইডি-কে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা ইসিআইআর দেখাতে হয় না। ইডির গ্রেফতারির পরে জামিন পেতে হলে অভিযুক্তকেই প্রমাণ করতে হয়, তিনি অপরাধ করেননি বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। জামিনে মুক্তি পেয়ে ফের কোনও অপরাধ করবেন না বলেও আদালতের বিশ্বাস অর্জন করতে হয়। অবসরের এক দিন আগে আজ প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার বেঞ্চ জানিয়েছে, আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে ইডি-কে দেওয়া এই দু’টি ক্ষমতাই প্রাথমিক ভাবে পুনর্বিবেচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিস জারি করা হয়েছে। চার সপ্তাহ পরে ফের শুনানি হবে নতুন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের বেঞ্চে।
মোদী সরকার অবশ্য এ দিনই রায়ের পুনর্বিবেচনা নিয়ে আপত্তি তুলেছে। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার যুক্তি, আর্থিক নয়ছয় রোখার আন্তর্জাতিক চুক্তি মেনে এ দেশের আইন তৈরি হয়েছে। প্রধান বিচারপতিও বলেছেন, ‘‘আমরা কালো টাকা বা আর্থিক নয়ছয় রোখার পক্ষে। আইনের উদ্দেশ্য মহৎ।’’ বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, মোদী সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে ইডির ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেছেন, আদালত সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ করছে না।
গত ২৭ জুলাই বিচারপতি এ এম খানউইলকরের বেঞ্চ ইডির সব ক্ষমতায় সিলমোহর দিয়েছিল। সেই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান কংগ্রেস সাংসদ কার্তি চিদম্বরম। আজ মামলাকারীদের হয়ে কপিল সিব্বল, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি পুরো রায় তথা ইডির যাবতীয় ক্ষমতা পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি জানান, শুধুমাত্র ইডির এফআইআর না দেখানো ও জামিন পেতে হলে অভিযুক্তেরই নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার দায়— এই দু’টি বিষয় পুনর্বিবেচনা করা হবে। ইডির এই ক্ষমতা সংবিধানের মৌলিক অধিকারের বিরোধী বলে অভিযোগ উঠেছিল। জামিন পাওয়ার এই জোড়া শর্ত অযৌক্তিক নয় বলেও সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল।