গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
ওষুধ এবং প্রসাধনীর বিজ্ঞাপনে ভুল তথ্যের ব্যবহার রুখতে দেশে চালু আছে ‘ড্রাগস অ্যন্ড কসমেটিক রুল, ১৯৪৫’। ওই আইনের ১৭০ নম্বর বিধিতে বলা আছে আয়ুর্বেদিক, সিদ্ধা এবং ইউনানি ওষুধের বিজ্ঞাপনে কোনও রকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো চলবে না। যদি তা করা হয়, তবে সেটি হবে আইনের চোখে অপরাধ। কিছু দিন আগে এমনই একটি বিভ্রান্তিমূলক বিজ্ঞাপনের জন্য আদালতে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল রামদেবকে। কিন্তু সম্প্রতি একটি বিবৃতি জারি করে ওই ১৭০ নম্বর বিধিটি প্রত্যাহার করে নেয় কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার কেন্দ্রের সেই বিবৃতিতে স্থগিতাদেশ দিল।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিমা কোহলি এবং সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ বলে, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের ওই বিবৃতি সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া মে মাসের একটি নির্দেশের বিরোধী।’’
গত ৭ মে সুপ্রিম কোর্ট এমনই একটি বিভ্রান্তিমূলক বা ভুল পথে চালনাকারী বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে একটি নির্দেশ দেয়। তাতে বলা হয়েছিল যে কোনও বিজ্ঞাপন প্রচার করার আগে বিজ্ঞাপনদাতাকে তার বয়ানের সত্যতার দায়িত্ব নিয়ে একটি ‘স্বঘোষণা’ জমা দিতে হবে। মে মাসে সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশের দু’মাসের মধ্যেই ওষুধের বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত বিধি ১৭০ ধারা প্রত্যাহারের সরকারি বিবৃতিটি জারি করে কেন্দ্রীয় আয়ূষ মন্ত্রক। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি কোহলি এবং বিচারপতি মেহতার বেঞ্চ বলে, ‘‘আয়ূষ মন্ত্রক গত বছর ২৯ অগস্ট ১৭০ নিয়ে দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অ়ঞ্চলগুলিকে একটি চিঠি দিয়েছিল। মে মাসের রায়ের পরে সেই চিঠি প্রত্যাহার করে নেওয়ার বদলে তারা এমন বিবৃতি দিল, যা কি না সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিরোধী!’’
উল্লেখ্য, ড্রাগস অ্যান্ড কসমেটিক রুলের ১৭০ নম্বর বিধি নিয়ে ২০২৩ সালের অগস্টে দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে একটি চিঠি দিয়েছিল কেন্দ্র। তাতে বলা হয়েছিল, রাজ্য যেন ১৭০ বিধিভঙ্গের জন্য কোনও ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে যেন তারা পদক্ষেপ না করে। সুপ্রিম কোর্ট সেই চিঠিরই উল্লেখ করে কেন্দ্রের কাছে জানতে চেয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের মে মাসের নির্দেশের পরও কেন সেই চিঠি ফেরানো হল না? তার পরেও নতুন বিবৃতি দিয়ে কেন ১৭০ বিধি প্রত্যাহার করা হল, যা কি না সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিরোধী? মঙ্গলবার কেন্দ্রের জারি করা ১৭০ প্রত্যাহারের ওই বিবৃতিতে স্থগিতাদেশ জারি করে কেন্দ্র। কেন্দ্রের আইনজীবী জানিয়েছেন, একটি হলফনামা জারি করে অচিরেই এই প্রশ্নের জবাব দেবে তারা।