—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
প্রশ্ন যে আসলে প্রশ্ন নয়, এক ধরনের সংযোগ, নিজ ভাবনার চূড়ান্ততা প্রতিষ্ঠা না করে অন্য মতকে জায়গা দেওয়ার চেষ্টা: রবীন্দ্রসঙ্গীতের আলোচনাকে এমন স্তরে পৌঁছে দিতে পারার মতো বাঙালি চিন্তক এখনও আছেন। সুদীপ্ত কবিরাজের প্রবন্ধটি কেবল এই সংখ্যার নয়, সাম্প্রতিক কালের বাংলা লেখাজগতেরই একটি উজ্জ্বল জ্যোতি।
দীপেশ চক্রবর্তী লিখেছেন মানবদুনিয়া ও পরিবেশ-দুনিয়ার চলাচলে চিরচেনা শাঁখের অচেনা তত্ত্ব। কবি ও রাজনীতি নিয়ে সুমন্ত মুখোপাধ্যায়, উদ্বাস্তু ক্যাম্প রাজনীতি নিয়ে রাজর্ষি দাশগুপ্তের লেখা দু’টি জরুরি। বাবার জীবন নিয়ে মেরুনা মুর্মুর অভিজ্ঞতালিখন বুঝিয়ে দেয় জাতি-বাস্তবের ব্যক্তি-অনুভব।
কলকাতা ২১, ভাদ্র ১৪৩১
সম্পা: মৈনাক বিশ্বাস সুমন্ত মুখোপাধ্যায় বোধিসত্ত্ব কর
৩০০.০০
সমালোচকদের নিছক ‘রিভিউয়ার’ নয়, হয়ে উঠতে হবে থিয়েটারের শিল্পভাষা ও ইতিহাসের আলোচক: এমন অভিপ্রায়েই সংখ্যাটি সাজাতে চেয়েছেন সম্পাদক। বিজন ভট্টাচার্য তুলসী লাহিড়ী ও চিত্রা সেনকে নিয়ে নিবন্ধে নাট্যশিল্পে তিন শিল্পীর লগ্নতাকে খুঁজেছেন উমা বসু দেবাশিস রায়চৌধুরী ও সুরঞ্জনা দাশগুপ্ত।
পূর্ব-পশ্চিম, নাট্যপত্র ২০২৪অতিথি
সম্পা: অসীম সামন্ত
২০০.০০
তিনটি ক্রোড়পত্রের শেষেরটিতে ১৯৪৮-১৯৭৩ পর্যন্ত গ্রুপ থিয়েটারের রোজনামচা, বাকি দু’টি সায়ক ও পূর্ব-পশ্চিম নাট্যগোষ্ঠীর বৃত্তান্ত, মেঘনাদ ভট্টাচার্য বিভাস চক্রবর্তী উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় সৌমিত্র মিত্রের কলমে।
ভূমধ্যসাগর, সেপ্টেম্বর ২০২৪
সম্পা:জয়া মিত্র
১৫০.০০
পুকুর শুধুই জলভর্তি একটা জায়গা নয়; আগৌর, আগরের মতো নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মিলেমিশে এক পূর্ণ অস্তিত্ব। প্রতিটি অঙ্গের নির্দিষ্ট কাজ আছে। এক-এক প্রদেশে তার এক-এক নাম। জলাশয়ের রকমভেদ নিয়ে তথ্যসমৃদ্ধ লেখা অনুপম মিশ্রের। শতবর্ষে স্মরণে উঠে এসেছে ‘আসানসোলের বিবেক’ মায়া চট্টোপাধ্যায়ের কথা।
শুধু সুন্দরবন চর্চা, মাতলা সংখ্যা
সম্পা: জ্যোতিরিন্দ্রনারায়ণ লাহিড়ী
৩০০.০০
পরিবেশ ও সংস্কৃতি ভাবনার এই পত্রিকা জুড়ে পরিবেশ-কথা: গদ্যে, কবিতায়। দেশ মানে শুধু মানুষ নয়, দেশের মাটি পাহাড় নদী উপত্যকাও, সম্পাদকীয়তে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় উল্লিখিত হয়েছে তা।
শতদল, ‘নবজাগরণ, সংস্কৃতি, পরিবেশ ও স্বাস্থ্য’
সম্পা: শচীনন্দন সাউ
৩০০.০০
“বিপুলা মাতলা নদী ঝড়ে উত্তাল।... গাছপালা, ঘরবাড়ি নিশ্চিহ্ন। সেই দৃশ্য দেখে পিডিংটন সাহেব বলে ফেললেন ‘সাইক্লোন’। সেই থেকে এ ধরনের ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় সারা পৃথিবী জুড়ে সাইক্লোন নামে পরিচিতি লাভ করল।” এক সময়ে ক্যানিং-এর কাছে ভরা জোয়ারে এ-পার ও-পার দেখা যেত না সুন্দরবনের মাতলা নদীর।
এবং মুশায়েরা, শারদীয় ১৪৩১
সম্পা: সুবল সামন্ত
৬০০.০০
উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে তার তীরেই গড়ে ওঠে ক্যানিং বন্দর। এখন সে নদী ক্ষীণকায়া, ভাটার সময় জেগে ওঠে বিরাট চর। মাতলাকে নিয়েই বিশেষ সংখ্যা: তার অতীতচারণ, জনজীবন, গতিপথ পরিবর্তন নিয়ে লিখেছেন কল্যাণ রুদ্র অনিমেষ সিংহ প্রমুখ।
স্যাস, নাট্যপত্র ২০২৪
সম্পা: সত্য ভাদুড়ি
৩০০.০০
বিদ্যাসাগর জনশিক্ষার প্রসারে, স্ত্রীশিক্ষা বিকাশের মধ্য দিয়ে নারীর আত্মজাগরণে ব্রতী হয়েছিলেন। বিবেকানন্দ বলেন, “আমাদের বৈজ্ঞানিক জাতি হতে হবে।” প্রফুল্লচন্দ্রের বিজ্ঞানসাধনা, অনাড়ম্বর জীবন, দেশপ্রেম আজও দৃষ্টান্ত।
কোরক, গীতিকার ও সুরকার
সম্পা: তাপস ভৌমিক
২৫০.০০
মনীষীদের কথাগুলি বহুচর্চিত, কিন্তু এই সময়ে এ রাজ্যে শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র-সহ নানা পরিসরের অন্ধকারে তাঁদের কৃতি ও কীর্তি স্মরণ জরুরি। একাধিক প্রবন্ধে সেই কথাই, সঙ্গে আঞ্চলিক সংস্কৃতি নিয়ে নিবন্ধ; কবিতা, গল্পও।
নিষ্পলক, রামমোহন মধুসূদন নজরুল
সম্পা: জগদীশচন্দ্র সরদার
২৫০.০০
সাহিত্য নিয়ে তত্ত্বচর্চা নয় শুধু, তা কতখানি আমাদের দিনযাপনের সত্য উদ্ঘাটন করতে পারছে, তারই খোঁজ এই পত্রিকার লেখায়। কথাসাহিত্যের উপর জোর বেশি এই সংখ্যাটিতে: আলোচিত হয়েছে সমরেশ বসু নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী শচীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় স্বপ্নময় চক্রবর্তী কুমার অজিত দত্ত ও অনিতা অগ্নিহোত্রীর গল্প-উপন্যাস।
কবিতীর্থ, বিনয় মজুমদার
সম্পা: অমলকুমার মণ্ডল
৫০০.০০
কিরণ মৈত্রের নাটক, জয় গোস্বামী ও পিনাকী ঠাকুরের কবিতা নিয়ে আলোচনা; প্রাবন্ধিক মুনতাসীর মামুন ও গোপা দত্ত ভৌমিককে নিয়েও। ইয়ুং ও রবীন্দ্রনাথের অবচেতনের নবদিগন্ত নিয়ে জগদিন্দ্র মণ্ডলের লেখাটি জরুরি।
সংবর্তক, ক্রোড়পত্র মধুসূদন জীবনানন্দ সমরেশ বসু বের্টোল্ট ব্রেখট
সম্পা: সৌরভ রঞ্জন ঘোষ
৩২৫.০০
আধুনিক ভারতীয় থিয়েটারের ইতিহাস রচনা ও আর্কাইভ গড়ে তোলার মতো জরুরি বিষয়ে নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনা ভাবাবে পাঠককে। বাংলাদেশের নাট্যচর্চা ও কলকাতার মঞ্চে নতুন ধারার নাট্যসৃষ্টি নিয়ে রচনা রাহমান চৌধুরী ও সুব্রত ঘোষের।
গল্পসরণি, অনুবাদক ননী ভৌমিক
সম্পা: অমর দে
৩৫০.০০
মধুসূদনের দ্বিশতজন্মবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে তপোধীর ভট্টাচার্য, জন্মশতবর্ষে হাবিব তনবিরকে আগরা বাজার থেকে চরণদাস চোর পর্যন্ত ফিরে দেখা কাবেরী বসুর কলমে। অনূদিত ও মৌলিক নাটক ছাড়াও, অসীম চট্টরাজ হর ভট্টাচার্য সত্য ভাদুড়ির বই নিয়ে অশোক মুখোপাধ্যায়ের আলোচনা।
কবিসম্মেলন, শারদীয় সংখ্যা
সম্পা: শ্যামলকান্তি দাশ
২৫০.০০
স্বর্ণযুগের বাংলা গানে শিল্পীই বেশির ভাগ সময় হয়ে ওঠেন আলোচ্য, গীতিকার-সুরকার থেকে যান আড়ালে। সেই বাস্তবতা মনে রেখে, বাংলার বিশিষ্ট গীতিকার-সুরকারদের মূল্যায়নে প্রয়াসী সংখ্যাটি। দুই পর্বে নানা প্রবন্ধ, প্রথমাংশে বাউল পদকর্তা, কৃষ্ণনগরের রায় পরিবারের সঙ্গীতচর্চা, অতুলপ্রসাদ রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের গান নিয়ে আলোচনা।
ধূসর শহর, হুয়ান রুলফো মুনাওয়ার রানা কুর্তলায়েন হায়দার
সম্পা: দেবাশিস চক্রবর্তী
৩০০.০০
দ্বিতীয়াংশটি তুলনায় বৈচিত্রময় ও অনুসন্ধানী— মোহিনী চৌধুরী বাণীকুমার প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রণব রায় গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার সলিল চৌধুরী পঙ্কজকুমার মল্লিক হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সুধীন দাশগুপ্ত শচীন ও মীরা দেব বর্মণ প্রমুখ উদ্ভাসিত সেখানে। গণসঙ্গীত ও শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়েও জরুরি লেখা।
কণ্ঠস্বর, ইদ সংখ্যা
সম্পা. সৈয়দ তানভীর নাসরীন
৪০০.০০
রামমোহন, মধুসূদন ও নজরুল— কেন এই তিন জনকে নিয়েই আলোচনা? কারণ তাঁদের সময় ও সমাজে যা ছিল ‘চল’, অনেক সময়েই তার বিপরীত অবস্থানে ছিল এঁদের ভাবনা। যুক্তি, আবেগ, বিদ্রোহ, এই তিন প্রণোদনা কী করে তাঁদের জীবন ও কাজে ফলিত হল, তা-ই আলোচিত এই সংখ্যায়।
বৈশাখী, শতবর্ষ পেরিয়ে অসিত সেন হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়
সম্পা: ধ্রুবজ্যোতি মণ্ডল
৩০০.০০
রামমোহন রায় ও পারসিক ঐতিহ্য, সম্পাদক মাইকেলের ইংরেজি রচনা, বুদ্ধদেব বসুর দেখা নজরুল, ফুটবল মাঠে নজরুল— নিবন্ধগুলি গবেষক ও সাধারণ পাঠক উভয়েরই কাজে দেবে। এ ছাড়াও সাম্প্রতিক কলকাতা ও বাংলাদেশ প্রসঙ্গে পুরুষতন্ত্র ও লিঙ্গসাম্য আর সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে নিবন্ধ, বিশ্বব্যাপী জলসঙ্কট ও জলদূষণ নিয়ে আলোচনা।
দেবভাষা, শারদীয়া ১৪৩১
সম্পা: কৃষ্ণেন্দু চাকী সৌরভ দে দেবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়
২৬০.০০
“আমরা অনেক অদৃশ্য দেবদেবী আছি/ বিনয়ও একজন অদৃশ্য দেবতা...” কে লিখতে পারেন কবিতায়? বিনয় মজুমদার নিজেই। তাঁর ‘অপ্রকাশিত অগ্রন্থিত কবিতা গণিত গল্প চিঠি প্রবন্ধ ছড়া গান দিনলিপি’ এই সংখ্যাটিতে, কবির নব্বইতম জন্মবর্ষে পাঠককে উপহার। এক লাইনের অণুকবিতা: “দৈব আমার বাড়িতে থাকে”।
বা অনন্য ‘রবীন্দ্রবিনয় সংগীত’, শুরুটা রবীন্দ্রনাথের, বাকিটা স‘বিনয়’। নানা লেখার খসড়ার প্রতিলিপি ছাপা হয়েছে, কিছু আলোকচিত্রও। পুনর্মুদ্রিত কয়েকটি সাক্ষাৎকারছাড়াও পড়তে ভাল লাগে এই সময়ের কলমে মূল্যায়নও।
চারটি ক্রোড়পত্র জুড়ে নানা প্রবন্ধ ছাড়াও রয়েছে গল্প, কবিতাগুচ্ছ, উপন্যাস, গ্রন্থ-সমালোচনা। নজর কাড়ে ‘এই দেশ এই সময়’ অংশে ভারতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার রাজনীতি ও ভবিতব্য নিয়ে আলোকপাত, এ ছাড়াও যুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনটি রচনা: প্যালেস্টাইনের লড়াইয়ে লিঙ্গপ্রশ্ন ও মেয়েদের সাহিত্যচর্চা তুলে ধরে প্রায়-অজানা এক দিক।
জন্মদ্বিশতবর্ষে মাইকেল মধুসূদন, ১২৫ বছরে জীবনানন্দ ও ব্রেখট এবং শতবর্ষী সমরেশ বসুকে নিয়ে বছরভর কাজ করেছে আরও পত্রিকা, এই সংখ্যাটির কয়েকটি লেখা নজর কাড়ে চিরাচরিত ভাবনা অতিক্রমণে, নতুন ভাবনা জোগানোর প্রয়াসে। প্রাসঙ্গিক কথাপট-সহ ব্রেখটের দিনলিপির ভাষান্তর পড়তে ভাল লাগে।
হরফচর্চা, সেপ্টেম্বর ২০২৪
সম্পা: সুস্নাত চৌধুরী
৬৫.০০
২০২১-এ জন্মশতবর্ষ পেরিয়েছে ননী ভৌমিকের— বাংলা অনুবাদে যিনি চিনিয়েছেন রুশ সাহিত্যের অনুপম সৃষ্টিগুলিকে: গোর্কি দস্তয়ভস্কি টলস্টয় পুশকিন গোগোল-সহ আরও কত না লেখকের! এর বাইরে আরও কত অনুবাদ এবং মৌলিক সাহিত্য রচনার রূপকার মানুষটি, অথচ অনালোচিত।
এই সংখ্যাটি তাই অতি জরুরি, সাধন চট্টোপাধ্যায় অমর মিত্র মণিদীপা দাশ ঋতম্ মুখোপাধ্যায়রা লিখেছেন ওঁর অনুবাদের ভাষা, প্রকরণ ও পরিসর নিয়ে। সম্পাদক নিজেও একটি নিবন্ধে সিংহাবলোকন করেছেনননী ভৌমিকের জীবনকৃতির। ক্রোড়পত্রে ঠাঁই পেয়েছে ননী ভৌমিক অনূদিত, ১৯৮৮-তে মস্কো থেকে প্রকাশিত ইউক্রেনের লোককথা— আজও চমৎকার!
“কোথায় সেই সূর্যপ্রভব বংশ আর কোথায় মন্দমতি আমি। মোহবশে যেন এই মান্দাসে চড়ে পার হতে চলেছি দুস্তর সমুদ্র।” সৌরীন ভট্টাচার্য লিখেছেন ‘ডায়েরি: রঘুবংশম্’-এর মঙ্গলাচরণটুকু শুধু, গৌরচন্দ্রিকায় নিজের সংস্কৃত ভাষা ও কাব্য পড়া আর শেখা না-শেখার স্মৃতি।
কবি ও কবিতার কাগজ হলেও, শারদ সংখ্যাটির শুরুতে চল্লিশেরও বেশি গদ্যরচনা, অবশ্য কবিতার বিস্তৃত পরিসর নিয়েই: অমিয় দেব কালীকৃষ্ণ গুহ সুমিতা চক্রবর্তী মৃদুল দাশগুপ্ত যশোধরা রায়চৌধুরী-সহ এই সময়ের নানা কলমে। তিনটি পর্ব মিলিয়ে প্রায় কয়েকশো কবিতা ছাড়াও বিশেষ প্রাপ্তি মোস্তাক আহমেদের নেওয়া কমল চক্রবর্তীর সাক্ষাৎকার। রয়েছে কবির ভ্রমণকথা, কাব্যনাটক।
ল্যাটিন আমেরিকার সাহিত্য নিয়ে বলতে গেলেই আসে হুয়ান রুলফোর কথা, অথচ মেক্সিকোর এই লেখক সারা জীবনে লিখেছেন খুব কম: খান পনেরো ছোটগল্প, একটি ক্ষীণতনু উপন্যাস। বাংলা অনুবাদে তাঁর রচনার বাছাই কয়েকটি তুলে ধরেছে পত্রিকার এই সংখ্যাটি। সঙ্গে উর্দু ভাষা ও সাহিত্যের দুই নক্ষত্র মুনাওয়ার রানা ও কুর্তলায়েন হায়দারকে নিয়েও ক্রোড়পত্র: দু’জনেই সাহিত্য অকাদেমি-সহ নানা সম্মাননায় ভূষিত।
অনুবাদই এই পত্রিকার প্রাণ, দেশ-বিদেশের জানা ও কম-জানা ভাষা-সংস্কৃতিকে অনুবাদে তুলে ধরার এই কৃতিকে প্রশংসা করতেই হয়, তা না হলে বাংলা অনুবাদে চিনা কল্পকাহিনি-লেখক ইউ হুয়া, বা সিনেমাব্যক্তিত্ব আন্তোনিন আর্তোর লেখা পড়ার সুযোগ কোথায়!
পত্রিকার ইদ সংখ্যায় শুধু মুসলমান মেয়েরাই লেখেন, জানিয়েছেন সম্পাদক। যুক্তি হিসাবে পেশ করেছেন একটি প্রশ্ন: ইদ উপলক্ষে এ-পার বাংলায় যতগুলি পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়, তার মধ্যেও ক’জন মেয়ের লেখা থাকে? আরও অনেক জোরের সঙ্গে বলা যেত: দুই বাংলার মূলধারার পত্রপত্রিকায় মুসলমান মেয়েদের উপস্থিতি এতই কম যে, তাঁদের জন্য পরিসর খুলে দেওয়া একটা কর্তব্য।
লেখিকাদের মধ্যে রয়েছেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা, উচ্চপদস্থ কর্মী, গৃহকর্ত্রীও। প্রবন্ধগুলির ভাবনার কেন্দ্রে রয়েছে মুসলমান নারী; ‘নিজেদের কথা’ শীর্ষক অংশটি তো বটেই। বেশ কয়েকটি গল্পেও উঠে এসেছে মুসলমান নারীর অন্দর বা অন্তরমহলের ছবি।
বাংলা বা হিন্দি, সিনেমার স্বর্ণযুগের আলোচনায় উঠে আসবেই অসিত সেন ও হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের কথা। দু’জনেই শতবর্ষ পেরিয়েছেন ২০২২-এ, এই সংখ্যাটি তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য। নানা পত্রিকায় ছবির জগতের তারকাদের নিয়ে টুকরো যে স্মৃতিচিত্র লিখেছিলেন অসিত সেন, এখানে দু’মলাটে পড়তে পারবেন পাঠক।
ওঁর পুত্র পার্থ সেনের স্মৃতিকথা ছাড়াও কয়েকটি লেখায় ওঁর কাজের মূল্যায়ন, বড় প্রাপ্তি দীপ জ্বেলে যাই ছবির চিত্রনাট্য। হৃষীকেশের পুনর্মুদ্রিত সাক্ষাৎকার; তাঁকে নিয়ে অমিতাভ বচ্চন শর্মিলা ঠাকুর গুলজ়ার প্রমুখের স্মৃতিকথা; সন্দীপ রায় লিখেছেন দুই পরিচালককে নিয়েই। দু’জনেরই জীবনপঞ্জি ও বিশদ তথ্য-সহ চলচ্চিত্রপঞ্জিটি কাজের।
শিল্প প্রদর্শনীস্থল, আর্কাইভ, শিল্পগ্রন্থ প্রকাশনা... দেবভাষা এই সব পরিচয়েই পরিচিত। তারই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পত্রিকা প্রকাশও। এ বছরের ভাবনাটি সম্পাদকীয়তে: “ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমের মাধুর্যকে সঙ্গে নিয়ে সেইসব পরিসরে চিরস্মরণীয় কিছু চিন্তক মানুষের কাজের আলোতেই প্রকাশ হোক উৎসবের অর্থ।”
চমৎকার সব লেখা: রবীন্দ্র-আলোকচিত্র থেকে জীবনকথা সন্ধান করেছেন সুশোভন অধিকারী, ইন্দ্রপ্রমিত রায় লিখেছেন কে জি সুব্রহ্মণ্যনের গড়া পুতুল নিয়ে। পড়া যাবে রেবা হোরের অপ্রকাশিত ডায়েরি, দেখা যাবে পরিমল গোস্বামীর ক্যামেরায় অতীতের উত্তরবঙ্গ, গণেশ হালুইয়ের চিত্রসংগ্রহ। গল্প কবিতা উপন্যাস বিজ্ঞান ভ্রমণ, কী নেই!
বাংলা ভাষাভাষী দুই প্রতিবেশী ভূখণ্ডে যে অশান্ত সাম্প্রতিক সময়, তা মনে রেখেই ‘বাংলা হরফের সরল ও বক্র রেখাগুলি আরেকভাবে চিনে নিতে চাওয়া’ এই সংখ্যায়।
বাংলাদেশের গণ-অভ্যুত্থানে পোস্টার সিরিজ় এঁকেছিলেন দেবাশিস চক্রবর্তী, তাঁর লেখায় ধরা পড়েছে সেই সময়ের যন্ত্রণাগাথা; আবু জার মোঃ আককাস লিখেছেন ‘শহিদ আবু সাঈদ ফন্ট’-এর জন্মকথা। ১৯১৭-র সবুজপত্র থেকে সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখার পুনর্মুদ্রণ ‘বাংলার বেখাপ বর্ণমালা’ নিয়ে; যুক্তাক্ষর ‘ঙ্গ’-র বিবর্তন, জরুরি লেখা।