Mamata Banerjee

Supreme Court of India: ডিজি মামলায় তোপ কোর্টের

কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়োগ সংস্থা ইউপিএসসি-র সঙ্গে আলোচনা না করেই রাজ্য সরকার ডিজি নিয়োগের অধিকার চেয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:৩৩
Share:

ফাইল চিত্র।

রাজ্য পুলিশের ডিজি নিয়োগে পুরো ক্ষমতার দাবি জানাতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়ল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রাজ্য কেন বারবার এই আর্জি জানিয়ে ‘আইনি প্রক্রিয়ায় অপব্যবহার’ করছে, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা প্রশ্ন তুলেছেন।

Advertisement

কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়োগ সংস্থা ইউপিএসসি-র সঙ্গে আলোচনা না করেই রাজ্য সরকার ডিজি নিয়োগের অধিকার চেয়েছিল। শীর্ষ আদালত আজ রাজ্য সরকারের সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও রাজ্য সরকারকে প্রশ্ন করেছেন, ‘‘কেন আপনারা বারবার এই বিষয়টি তুলছেন এবং সময় নষ্ট করছেন? এটা কি আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার নয়?’’

২০০৬-এ সুপ্রিম কোর্ট প্রকাশ সিংহ মামলায় রাজ্য পুলিশের ডিজি নিয়োগের নিময়কানুন বেঁধে দিয়েছিল। সেই রায়ে সাতটি নির্দেশিকার মধ্যে অন্যতম ছিল, ইউপিএসসি (ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন) যোগ্য পুলিশ অফিসারদের মধ্যে থেকে অভিজ্ঞতা, কাজের দক্ষতা, চাকরির মেয়াদের নিরিখে তিন জন আইপিএস অফিসারের একটি তালিকা তৈরি করে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠাবে। এই অফিসারদের অন্তত দু’বছর চাকরির মেয়াদ থাকতে হবে বলেও শর্ত বেঁধে দেওয়া ছিল। মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁদের মধ্যে থেকেই একজনকে নিয়োগ করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, এ বার ডিজি-র পদ থেকে বীরেন্দ্র-র অবসরের সময় এই বিষয়েই ইউপিএসসি-র সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের মতান্তর হয়। ইউপিএসসি সময় মতো তিন জনের নামের তালিকা রাজ্যকে পাঠায়নি। ফলে বীরেন্দ্র-র অবসরের পরে আইপিএস-দের মধ্যে প্রবীণতম মনোজ মালবীয়কে ডিজি-র দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে পশ্চিমবঙ্গ সরকার আর্জি জানায়, সংবিধানে পুলিশ সংক্রান্ত বিষয়টি রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। ফলে ডিজি নিয়োগের বিষয়ে রাজ্যকেই সব ক্ষমতা দেওয়া হোক। ইউপিএসসি-র পক্ষে পুলিশ বাহিনীতে কোন অফিসারের কতখানি দক্ষতা, তা যাচাই করা সম্ভব নয়। সংবিধানেও ইউপিএসসি-কে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। ডিজি পদের জন্য কোন অফিসার যোগ্য, তা রাজ্য সরকারের পক্ষেই বোঝা সম্ভব।

রাজ্যের আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা আজ এই বিষয়টি তুলতেই বিচারপতি রাও বলেন, ‘‘কোনও ব্যক্তি এই ধরনের মামলা করলে আমরা শুনতামই না। এখন রাজ্য সরকারই এই সব মামলা করছে। আপনারা কেন বারবার এই বিষয়টি তুলে সময় নষ্ট করছেন? এক দিকে আপনারাই বলেন, জামিনের মতো জরুরি বিষয় আদালতে শোনা হয় না, অন্য দিকে আপনারাই এই সব মামলা দায়ের করছেন! এটা কি আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার নয়?’’ রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, ডিজি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ইউপিএসসি-কে ক্ষমতা দেওয়াটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপরে আঘাত। প্রকাশ সিংহ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ও আইনি কাঠামো ও সংবিধানসম্মত নয় বলে রাজ্য যুক্তি দিয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের যুক্তি গ্রহণ করেনি। সব রাজ্যের মতামত নিয়েই সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল। উল্টে অভিযোগ তুলেছে, পশ্চিমবঙ্গ এর আগেও একই বিষয়ে আপত্তি তুলেছে।

পুলিশের শীর্ষ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের রায় এখনও অনেক রাজ্যই কার্যকর করেনি বলে আইনজীবী হরিশ সালভে একটি মামলা করেছিলেন। রাজ্যের আইনজীবীর অনুরোধে আদালত জানিয়েছে, এ বিষয়ে অক্টোবরে শুনানির সময় রাজ্যকে সওয়াল করার সুযোগ দেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement