প্রাক্তন সাংসদদের অবসরভাতা ও অন্যান্য সুযোগসুবিধে খারিজ করার আর্জি শুনতে রাজি হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ৮০ শতাংশ প্রাক্তন সাংসদ এখন ‘কোটিপতি’ বলেও মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত। আজ বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিরোধী সাংসদরা। আর সরকারের পক্ষে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়ে দিলেন, সরকারি কোষাগারের অর্থ কী ভাবে খরচ হবে তা একমাত্র সংসদই স্থির করতে পারে। এই বিষয়টি রাষ্ট্রের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলিকেও স্বীকার করে নিতে হবে। ফলে এই বিষয়টি নিয়ে বিচারব্যবস্থা ও আইনসভার সংঘাতের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
প্রাক্তন সাংসদ এবং তাঁদের স্ত্রী বা স্বামীদের অবসরভাতা ও অন্যান্য সুযোগসুবিধে বাতিল করতে শীর্ষ আদালতে মামলা করেছে ‘লোক প্রহরী’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আইনজীবী আর্জিতে জানিয়েছেন, সংবিধানের ১০৬ নম্বর অনুচ্ছেদ মেনে ১৯৫৪ সালের সাংসদ আইন তৈরি হয়েছিল। ১০৬ নম্বর অনুচ্ছেদে সাংসদ ছাড়া অন্য কাউকে অবসরভাতা বা সুবিধে দেওয়ার কথা বলা নেই। কিন্তু পরে সাংসদ আইন সংশোধন করে প্রাক্তন সাংসদের স্ত্রী বা স্বামী এবং তাঁর উপরে নির্ভরশীল ব্যক্তিদের অবসরভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর্জিতে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টের বিচারপতিরাও স্ত্রী বা স্বামীকে বিনা খরচে ট্রেন বা বিমানে নিয়ে যেতে পারেন না। কিন্তু প্রাক্তন সাংসদরা সারা জীবন এক জন সঙ্গীকে নিয়ে বিনা খরচে ট্রেনের বাতানুকূল শ্রেণিতে ঘুরতে পারেন। এ সব সুযোগসুবিধের জন্যই রাজনীতি এক আকর্ষণীয় পেশায় পরিণত হয়েছে।
আর্জিটি শুনতে রাজি হয়ে কেন্দ্র ও নির্বাচন কমিশনের মত জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত। আজ রাজ্যসভায় প্রসঙ্গটি তোলেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ নরেশ অগ্রবাল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সাংসদরা কোনও কাজ না করেই বেতন ও অবসরভাতা পান, এমন ধারণা তৈরি করা হচ্ছে।’’ কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘দেশের প্রাক্তন সাংসদদের ৮০ শতাংশ ক্রোড়পতি শুনে অবাক হলাম। বর্তমান সংসদের ৮০ শতাংশ সদস্যও মেয়াদ শেষের পরে ক্রোড়পতি হতে পারবেন না।’’ নরেশ অগ্রবাল জানান, অনেক প্রাক্তন সাংসদের আর্থিক হাল খুবই খারাপ। উত্তরপ্রদেশের এক প্রাক্তন সাংসদের সন্তানরা মজুর আর শিল্পীর কাজ করে দিন গুজরান করেন।
এর পরে সরকারের তরফে অর্থমন্ত্রী জেটলি বলেন, ‘‘সরকারি কোষাগারের অর্থ কী ভাবে খরচ হবে তা স্থির করে সংসদ। এ নিয়ে সংবিধানের নির্দেশ খুব স্পষ্ট। অন্য কোনও প্রতিষ্ঠান এই বিষয়টি স্থির করতে পারে না।’’