গার্হস্থ্য হিংসা মামলায় গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। ফাইল চিত্র।
বিবাহিত মহিলাদের বসবাসের অধিকার কেবল শ্বশুরবাড়ির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। কর্মসূত্রে বাইরে থাকা স্বামীর ভাড়াবাড়িতেও তাঁর থাকার অধিকার থাকতে পারে। বৃহস্পতিবার গার্হস্থ্য হিংসা মামলার একটি শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। বিচারপতি এমআর শাহ এবং বিচারপতি বিভি নাগারত্নের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, বিবাহিতাদের সম্পত্তির অধিকারের বিষয়টি শুধু স্বামীর পৈতৃক বাড়ির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, এমনটা হতে পারে না।
সংশ্লিষ্ট মামলাটি দায়ের করেছিলেন এক মহিলা। বিধবা হওয়ার পর গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ করেন তিনি। জানান, তাঁর বসবাসের অসুবিধার কথাও। যার প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, বহু ক্ষেত্রে দেখা যায় শ্বশুরবাড়ির বাইরে থাকা ভারতীয় মহিলাদের বেশ কয়েকটি সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। বিশেষত, তাঁদের বসবাসের ব্যাপারে। তাই তাঁদের বসবাসের অধিকার বা সম্পত্তির অধিকার কেবল স্বামীর পৈতৃক সম্পত্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। আদালত এ-ও জানায়, গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগের ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী প্রোটেকশন অফিসারের রিপোর্ট দরকার হয়। সে ক্ষেত্রে বসবাসের বিষয়টি যদি রিপোর্টে না-ও উল্লেখ থাকে, সে ক্ষেত্রেও অধিকারের বিষয়টি দেখা যেতে পারে।
কিন্তু শ্বশুরবাড়ির পরিবারের যে সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনও মহিলা গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ করছেন, তাঁদের সঙ্গেই এক ছাদের নীচে থাকা কি বাধ্যতামূলক? এই বিষয়টিতেও মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত। জানানো হয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ আনছেন বধূ, তাঁদের সঙ্গে তিনি না চাইলে একসঙ্গে না-ও থাকতে পারেন। তা ছাড়া, কোনও ভাগাভাগি পরিবারে কোনও মহিলা যদি গার্হস্থ্য হিংসার মামলা করেন, তা হলে বসবাসের জন্য তিনি সাহায্যের আবেদন করতে পারেন।
শেষে শীর্ষ আদালত জানায়, ভারতে একজন মহিলার জন্য শ্বশুরবাড়িতে থাকা একটি সামাজিক নিয়ম। যদি না পেশাগত বা অন্যান্য কারণে, স্বামী এবং স্ত্রী ভিন্ন স্থানে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। এমনকি, যেখানে এক জন মহিলা যুক্তিসঙ্গত কারণে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছেন, তাঁরও ওই বাড়িতে থাকার অধিকার রয়েছে।