গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
ভোটের আগে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছোটায় প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক দল। থাকে বিনামূল্যে নানা সুবিধা ও পরিষেবার পাইয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার। নিখরচায় পাইয়ে দেওয়া সেই প্রতিশ্রুতিকে ‘গুরুতর বিষয়’ হিসাবে চিহ্নিত করল সুপ্রিম কোর্ট। একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি এনভি রমণার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার তাদের পর্যবেক্ষণে বলেছে, ‘জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি আর বিনামূল্যে দেওয়া (ফ্রিবিজ) এক বিষয় নয়।’
বিজেপি ঘনিষ্ঠ অশ্বিনী উপাধ্যায়ের দায়ের করা জনস্বার্থ মামলা শুনানিতে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি এনভি রমণা বলেন, ‘‘যাঁরা বিনামূল্যে পাচ্ছেন তাঁরা তা পেতে চান। আবার অনেকে বলেন, তাঁদের করের টাকা প্রকৃত উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে ব্যবহার করতে হবে। তাই দু’পক্ষের বক্তব্যই শোনা প্রয়োজন।’’ সরকারি কোষাগারের খয়রাতি বন্ধের বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করার কথাও বলেছে শীর্ষ আদালত।
প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, ভারতের মতো দেশে এখনও দারিদ্র রয়েছে। তাই ক্ষুধার্তদের খাদ্য দেওয়ার মতো কর্মসূচি প্রয়োজন। কিন্তু বিনামূল্যে পাইয়ে দেওয়ার প্রবণতা যাতে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি না করতে পারে, সে দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজন খয়রাতির রাজনীতি বন্ধ করা। আগামী ১৭ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
অতীতে বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভা ভোটের প্রচারে টিভি, ল্যাপটপ, ট্যাব, স্মার্টফোন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি এবং জেতার পরে তা পালনের দৃষ্টান্ত রয়েছে। গত মাসে আম আদমি পার্টি (আপ)-র নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল গুজরাতে গিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ক্ষমতায় এলে তাঁরা বিনামূল্যে ৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ দেবেন। বকেয়া বিলে ছাড়ের পাশাপাশি গ্রাম-শহর নির্বিশেষে দেওয়া হবে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পরিষেবাও। পঞ্জাবের বিধানসভা ভোটের আগেও একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিনামূল্যে জিনিস ও পরিষেবা দেওয়ার বিনিময়ে ভোট চাওয়াকে কটাক্ষ করেছিলেন। এই অভ্যাসকে ‘টোপ’ দেওয়া বলেও সমালোচনা করেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল শীর্ষ আদালতও।