Assembly election in J&K

জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা ভোট দ্রুত করাতে হবে, সময় বেঁধে দিয়ে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

জম্মু-কাশ্মীরে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল অসাংবিধানিক নয় বলেই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিল, যত দ্রুত সম্ভব জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:০৯
Share:

জম্মু-কাশ্মীরে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল অসাংবিধানিক নয় বলেই সোমবার রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিল, যত দ্রুত সম্ভব জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি বিধানসভা নির্বাচন করাতে হবে সেখানে। তার সময়সীমাও বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ।

Advertisement

শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করাতে হবে। জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে এই নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।

সোমবার প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল অসাংবিধানিক নয়। রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত বৈধ ছিল। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, অনুচ্ছেদ ৩৭০-এ জম্মু ও কাশ্মীরকে যে বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়েছিল, তা সাময়িক। কাশ্মীরে সংবিধান সভা বাতিল হয়ে যাওয়ার পরেও রাষ্ট্রপতির ওই অনুচ্ছেদ বাতিল করার অধিকার ছিল। ফলে যা হয়েছে, তা অসাংবিধানিক নয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, জম্মু ও কাশ্মীরকে পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা দিতে হবে। তবে লাদাখ কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলই থাকবে বলে জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি সঞ্জয় কল জানান, জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রসঙ্গে তিনি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে এক মত। কাশ্মীরে সেনাবাহিনী প্রসঙ্গে বিচারপতি কল বলেন, ‘‘শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করা সেনার কাজ। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা তাদের কাজ নয়। কাশ্মীরে সেনা ঢোকায় তার কঠিন মূল্য দিতে হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।’’

Advertisement

গত সপ্তাহে লোকসভায় জম্মু-কাশ্মীর সংশোধিত পুনর্গঠন বিল ও জম্মু-কাশ্মীর সংরক্ষণ বিল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার সময় জম্মু-কাশ্মীরে দ্রুত বিধানসভা নির্বাচন করিয়ে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান অধিকাংশ বিরোধী সাংসদ। জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়ে দেন, উপযুক্ত সময়ে সেখানে নির্বাচন হবে। তাঁর দাবি, ২০১৯ সালে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পরেই উপত্যকায় পরিকাঠামোগত উন্নতি করা সম্ভব হয়েছে। তৈরি হয়েছে আইআইটি, আইআইএম, এমসের মতো প্রতিষ্ঠান। তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায় সেই সময় বলেন, ‘‘সেই উন্নতি তো ৩৭০ ধারা থাকলেও করা যেত!’’ জবাবে শাহ বলেন, ‘‘এখন আপনি বুঝবেন না দাদা। যখন আমাদের সরকার বাংলায় হবে, তখন উন্নয়ন হবে। তখন বুঝতে পারবেন।’’ পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, ‘‘৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পরে জম্মু-কাশ্মীরে শান্তি ফিরে আসে। সেই কারণে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ দ্রুত করা সম্ভব হয়েছে।’’

জম্মু-কাশ্মীর সংশোধিত পুনর্গঠন বিলে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার আসনসংখ্যা ৮৩ থেকে বাড়িয়ে ৯০ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার পক্ষ। বিলে যাযাবর গোষ্ঠী থেকে দু’জন (যাঁদের এক জন মহিলা) ও পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন এমন এক জন-সহ মোট তিন জনকে মনোনীত করবেন উপরাজ্যপাল। আর জম্মু-কাশ্মীর সংরক্ষণ বিলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মহিলা বিশেষ করে তফসিলি জাতি ও জনজাতির সমাজের নারীদের শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দু’টি বিলই লোকসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে।

আলোচনার সময় বরাবরের মতো ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর কাশ্মীর নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সরকার পক্ষ। বিল নিয়ে আলোচনায় কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য নেহরুর দু’টি ‘ভুল’কে দায়ী করে সরব হয়েছিলেন শাহ। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের যে লড়াই হয়, তাতে সুবিধাজনক অবস্থায় ছিল ভারত। আর তিন দিন সময় পেলেই পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের জমি ভারতীয় ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত হত। শাহের অভিযোগ, ‘‘তা না করে নেহরু আচমকাই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে দেন। ফলে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জন্ম হয়। না হলে আজ ওই ভূখণ্ড ভারতের অধিকারে থাকত। দ্বিতীয় ভুল, কাশ্মীর সমস্যাকে রাষ্ট্রপুঞ্জের কোর্টে পাঠিয়ে দেওয়া।’’ শাহ বলেন, ‘‘ওই দু’টি সিদ্ধান্তকে নেহরুপন্থার বিপর্যয় হিসেবে বলা হয়, আমি তা সমর্থন করি। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, নেহরুর ওই ভুলগুলির কারণেই কাশ্মীরকে এত দীর্ঘ সময় ধরে ভুগতে হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement