—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কলকাতায় মেট্রো রেলের কাজের জন্য ময়দান এলাকায় আপাতত কোনও গাছ কাটা যাবে না। আজ সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছে। সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড মেট্রো রেলের কাজ চালিয়ে যেতে পারবে। কিন্তু কোনও গাছ কাটা যাবে না, অথবা গাছ তুলে নিয়ে গিয়ে অন্য কোথাও রোপণের কাজও করা যাবে না।
জোকা-এসপ্লানেড মেট্রোপথে মাঝেরহাট থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত অংশে মেট্রোর কাজের জন্য কলকাতা ময়দানের ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের আশপাশের এলাকায় প্রায় ৭০০ গাছ কাটা পড়তে পারে বলে কলকাতা হাই কোর্টে ‘পাবলিক’ (পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন কলকাতা) নামের একটি অসরকারি সংস্থা জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল। গত ২০ জুন কলকাতা হাই কোর্ট সেই মামলা খারিজ করে দিয়ে মেট্রো রেলের কাজে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিল। কিন্তু হাই কোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি আর গাভাই ও বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ এ বিষয়ে রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার, মেট্রো প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল), সেনাবাহিনী, কলকাতা পুরসভা ও রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিস জারি করেছে। তিন সপ্তাহ পরে ফের শুনানি হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা আরভিএনএল-কে জানিয়েছেন, ‘‘আগামী শুনানি পর্যন্ত কোনও গাছ কাটা যাবে না বলে আমরা নির্দেশ জারি করছি। আপনারা নির্মাণকাজ চালিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু আজ থেকে আর গাছ কাটবেন না।’’
কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করা ‘পাবলিক’ নামের অসরকারি সংস্থাটির বক্তব্য ছিল, ময়দান চত্বর হল কলকাতার ফুসফুস। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পাশে ময়দানে নতুন মেট্রো স্টেশন তৈরি হলে কলকাতার সেই ফুসফুস চিরকালের মতো নষ্ট হয়ে যাবে। সেখানে স্টেশন তৈরি হলে তাতে কতখানি লাভ হবে, তা খতিয়ে না দেখেই প্রস্তাবিত স্টেশনের জায়গা ঠিক করা হয়েছে। জোকা-মাঝেরহাটের মধ্যে এখন মেট্রো রেল চলছে। মাঝেরহাট থেকে এসপ্লানেডের মাঝের অংশে ময়দান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিকল্প পথে মেট্রো রেল তৈরি সম্ভব কিনা, তা বিশেষজ্ঞদের খতিয়ে দেখা দরকার।
কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্য গত ২০ জুন এই মামলা খারিজ করে দিয়ে বলেছিলেন, আরভিএনএল গাছ কাটার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়েছিল। সেই অনুমতি অযৌক্তিক বলা যায় না। বন দফতর আদালতে জানিয়েছে, সমস্ত রকম নিয়ম মেনেই ময়দানের গাছ কাটা হয়েছে বা সেই গাছ অন্যত্র রোপণ করা হয়েছে। কিন্তু আজ সুপ্রিম কোর্টে মামলাকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়, বিপুল সংখ্যক গাছ কাটা পড়বে বলে আশঙ্কা। ওই সব গাছের কী হবে, কোথায় ফের রোপণ করা হবে, তা আরভিএনএল-কে জানাতে বলা হোক।