ফাইল চিত্র।
কলকাতায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে নগদ ২১ কোটি টাকা উদ্ধার নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। এরই মধ্যে আগামিকালই আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে (পিএমএলএ) গ্রেফতারি, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত কিংবা তদন্তের প্রক্রিয়ায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের(ইডি) ক্ষমতা নিয়ে রায় দিতে চলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই বিষয়ে ইডির বিস্তৃত ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে বেশ কিছু মামলা হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। আর আজই সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের একটি তথ্য দেখিয়ে দিয়েছে, মোদী সরকারের আমলে কতটা প্রবল ভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ইডি।
বিরোধীদের নিশানা করতে মোদী সরকার ইডি ব্যবহার করছে বলে লাগাতার অভিযোগ করে যাচ্ছে বিরোধী দলগুলি। সংসদে পেশ হওয়া কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের তথ্য বলছে, মোদী ক্ষমতায় আসার আগের নয় বছরে ইডি মাত্র ১১২টি তল্লাশি চালিয়েছিল। আর দেশে এনডিএ সরকারের আমলে, গত আট বছরে ৩,০১০টি তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০১৪-১৫ থেকে ২০২১-২২, এই আট বছরে ইডি ৩,০১০টি তল্লাশি চালিয়ে ৯৯,৩৫৬ কোটি টাকার অর্থ ও সম্পত্তি আটক করেছে। অর্থ মন্ত্রকের দাবি, তল্লাশির সংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি পাওয়া থেকেই প্রমাণিত, আর্থিক নয়ছয় আটকানোর প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে সরকারের। বেআইনি লেনদেনের খোঁজ পেতে গোয়েন্দা ব্যবস্থারও উন্নতি হয়েছে, তা-ও স্পষ্ট।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে ২০০৪-০৫ থেকে ২০১৩-১৪ পর্যন্ত নয় বছরে ১১২টি তল্লাশিতে ৫,৩৪৬ কোটি টাকার নগদ, সম্পত্তি আটক হয়েছিল। তবে ওই নয় বছরে ১০৪টি চার্জশিট পেশ করলেও ইডি কাউকেই দোষী সাব্যস্ত করতে পারেনি। সেই তুলনায় গত আট বছরে ৩,০১০টি তল্লাশিতে তার প্রায় ১৯ গুণ নগদ অর্থ, সম্পত্তি আটক হয়েছে। ২৩ জন অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হয়েছে।
সরকারি কর্তারা অবশ্য মনে করছেন, ইডি যে পরিমাণে মামলা করছে, অর্থ-সম্পত্তি আটক করছে, যে সংখ্যায় গ্রেফতারি চলছে, সেই তুলনায় অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার খুবই কম। ২০১৯-২০ পর্যন্তও ইডি বছরে গড়ে ২০০টির মতো মামলা দায়ের করতো। গত দু’বছরে তারা ৯৮১টি ও ১১৮০টি মামলা দায়ের করেছে। আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে গত ১০ বছরে ৩,৮৯৫টি মামলা করেও ইডি মাত্র ২৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করতে পেরেছে। গত আট বছরে ৯৯,৩৫৬ কোটি টাকার আটক সম্পত্তির মধ্যে শেষ পর্যন্ত ৮৬৯ কোটি টাকার অর্থ, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে।