শ্রীকান্ত পুরোহিত
প্রথমে সাধ্বী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর। এ বার লেফটেন্যান্ট কর্নেল শ্রীকান্ত পুরোহিত।
মহারাষ্ট্রে মালেগাঁওতে ২০০৮-এর বিস্ফোরণের মামলায় অভিযুক্ত পুরোহিতকে আজ জামিন দিল সুপ্রিম কোর্ট। ‘হিন্দু সন্ত্রাস’-এর ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার নরম অবস্থান নিচ্ছে কি না, ফের উঠে গেল সেই প্রশ্ন।
মালেগাঁও বিস্ফোরণে মূল অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞাকে এর আগে ‘ক্লিন চিট’ দিয়েছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। আজ শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, পুরোহিতের বিরুদ্ধে এনআইএ-র চার্জশিটের সঙ্গে আগের মহারাষ্ট্র পুলিশের সন্ত্রাস দমন বাহিনী (এটিএস)-এর চার্জশিটের যথেষ্ট ফারাক রয়েছে। পুরোহিতের হয়ে প্রবীণ আইনজীবী হরিশ সালভে সওয়াল করেছেন, পুরোহিত গত ৮ বছর ৮ মাস জেলে বন্দি। এখনও চার্জ গঠন হয়নি। চার্জ গঠন হয়ে দোষী প্রমাণিত হলেও তাঁর সর্বাধিক সাত বছর জেল হতে পারে। ওই প্রাক্তন সেনা অফিসারের বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র সংগঠিত অপরাধ দমন আইনে মামলা আগেই খারিজ হয়ে গিয়েছে। ফলে জামিন পেতে বাধা নেই। এরপরেই পুরোহিতের জন্য শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেন বিচারপতি আর কে অগ্রবাল ও বিচারপতি অভয়মোহন সাপ্রে। মালেগাঁও বিস্ফোরণে মোট সাত জন মারা গিয়েছিলেন। অভিযুক্ত ১২ জনের সকলেই ছিলেন হিন্দু। যাদের অনেকের সঙ্গেই আরএসএস, সঙ্ঘ-পরিবারের যোগাযোগ পাওয়া যায়। অভিযোগ ছিল, মুসলমান অধ্যুষিত এলাকা বলেই মালেগাঁওকে বেছে নেওয়া হয়।
আজ পুরোহিতের জামিনের পরে এনআইএ তথা মোদী সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস, বাম নেতারা। কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি সরকার আরএসএস-এর সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।’’ আর এক কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালার বক্তব্য,‘‘ মোদী সরকার কোনও স্থায়ী এনআইএ প্রধানই ঠিক করতে পারেননি। কেন বার বার বর্তমান প্রধান শরদ কুমারের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে? যাতে এই সব মামলায় তদন্ত প্রভাবিত করা যায়?’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর যুক্তি, ‘‘যাঁর সুবিচার পাওয়ার কথা, তিনি পাবেনই।’’
ইউপিএ সরকার বিজেপি-আরএসএসের বিরুদ্ধে ‘হিন্দু সন্ত্রাসে’ মদতের অভিযোগ তুললেও বিজেপি বরাবরই বলে এসেছে, সন্ত্রাসের কোনও রং হয় না।
কিন্তু মোদী জমানায় ‘হিন্দু সন্ত্রাস’ নিয়ে এনআইএ-র নরম মনোভাব নেওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। শ্রীকান্ত পুরোহিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, অন্যতম অভিযুক্ত দয়ানন্দ পাণ্ডে তাঁকে বিস্ফোরণের জন্য আরডিএক্স জোগাডের নির্দেশ দেন। আজ আদালতে এনআইএ-র তরফে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল মণীন্দ্র সিংহ যুক্তি দেন, পুরোহিতের বিরুদ্ধে কিছু প্রমাণ মিলেছে। যার ভিত্তিতে চার্জ গঠন হবে। কিন্তু সালভের যুক্তিতে তা ধোপে টেকেনি।