উচ্ছেদের সরকারি উদ্যোগের প্রতিবাদে হলদোয়ানিতে অবস্থান বিক্ষোভ। ফাইল চিত্র।
উত্তরাখণ্ডের হলদোয়ানিতে রেলের জমি থেকে কয়েক হাজার বাসিন্দাকে উচ্ছেদের জন্য সরকারি উদ্যোগে সায় দিল না সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে উত্তরাখণ্ড হাই কোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, ‘এত মানুষকে একসঙ্গে রাতারাতি উৎখাত করা যায় না।’
হলদোয়ানি রেলস্টেশনের পাশে প্রায় দু’কিলোমিটার জুড়ে গফুর বস্তি, ঢোলক বস্তি, ইন্দিরা নগর ও বনভুলপুরা এলাকার রেলের জমিতে কয়েক দশক ধরে বসবাস ৪,০০০-এর বেশি পরিবারের। রয়েছে, দোকানপাট, সরকারি স্কুল, কলেজ, মন্দির, মসজিদ, ব্যাঙ্ক, মায় পুরসভার জলের ট্যাঙ্কও। কিন্তু সে রাজ্যের বিজেপি সরকার ওই জবরদখল মুক্ত করতে সক্রিয়। গত ২০ ডিসেম্বর উত্তরাখণ্ড হাই কোর্ট রায় দিয়েছিল, ৭ দিনের মধ্যে এই জমি ‘জবরদখল-মুক্ত’ করতে হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পি এল নরসিমহা এবং বিচারপতি এসএ নাজিরের বেঞ্চ সেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, হলদোয়ানির কংগ্রেস বিধায়ক সুমিত হৃদয়েশের নেতৃত্বে হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ওই বাসিন্দারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। বৃহস্পতিবার সেই আবেদনের শুনানি হয় শীর্ষ আদালতে। তার আগে বুধবার রেল এবং উত্তরাখণ্ড পুলিশের আধিকারিকেরা এলাকা পরিদর্শনে গেলে সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হয়। কার্যত দিল্লির শাহিনবাগের আদলে উচ্ছেদের প্রতিবাদে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের ঘোষণাকে স্বাগত জানান তাঁরা।
হাই কোর্টের শুনানিতে রেল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিলেন, ওই এলাকায় বসবাসকারীরা জমির মালিকানার কোনও বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। সেই যুক্তি কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন কংগ্রেসে নেতা কাজি নিজামুদ্দিন। তবে তাঁর দাবি, ৭০ বছর ধরে ওই এলাকায় বসবাস করছেন। শীতের মরসুমে রাতারাতি তাঁদের উচ্ছেদ করা মানবিকতার পরিপন্থী। ঘটনার নেপথ্যে কেন্দ্র এবং বিজেপি পরিচালিত উত্তরাখণ্ড সরকারের ‘অতিসক্রিয়তা’ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, রেলের জমিতে বসবাসকারী পরিবারগুলির বড় অংশই সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর।