মহারাষ্ট্রের ভীমা-কোরেগাঁও হিংসা মামলায় ধৃত সমাজকর্মী তথা প্রাক্তন অধ্যাপিকা সোমা সেনের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জের বেঞ্চ জেলবন্দি এই অভিযুক্তকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
জামিন দেওয়ার সময় সোমাকে কিছু শর্ত দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর বেঞ্চ বলেছে, জামিনে থাকাকালীন সোমাকে সব সময় তাঁর মোবাইলের জিপিএস চালু রাখতে হবে। তাঁর নতুন মোবাইল নম্বর এবং বাড়ির ঠিকানা তদন্তকারী অফিসারকে জানিয়ে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে পাসপোর্ট পুলিশের কাছে জমা রাখতে হবে এবং তাঁরা মহারাষ্ট্রের বাইরে কোথাও যেতে পারবেন না বলে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে।
শুক্রবার সোমার জামিনের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, সোমা বয়সজনিত সমস্যায় ভুগছেন। তা ছাড়া তিনি দীর্ঘ দিন কারাবাসে রয়েছেন। উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ আদালতে জানিয়েছিল সোমাকে আর হেফাজতে রাখার প্রয়োজন নেই। এই সব কিছু মাথায় রেখেই ভীমা কোরেগাঁও হিংসা মামলায় ধৃতের জামিন মঞ্জুর করল আদালত।
২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি মহারাষ্ট্রের ভীমা-কোরেগাঁওয়ে দলিত সংগঠন এলগার পরিষদের বিজয়দিবস অনুষ্ঠান থেকে হিংসা ছড়িয়েছিল। পুলিশের দাবি, সেই ঝামেলায় জড়িত ছিলেন সোমা। এ ছাড়াও এই মামলায় বর্ষীয়ান কবি ভারাভারা রাও, ট্রেড ইউনিয়ন নেত্রী আইনজীবী সুধা ভরদ্বাজ, অধ্যাপক আনন্দ তেলতুম্বে-সহ বেশ কয়েক জন বুদ্ধিজীবীর নামও জড়িয়েছিল। তাঁদের অনেককেই গ্রেফতার করে পুলিশ।
এই মামলায় ২০১৮ সালের ৬ জুন সোমাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পুলিশের অভিযোগ ছিল, ওই পাঁচ জন ভীমা কোরেগাঁওয়ে দলিতদের অনুষ্ঠান ঘিরে হিংসায় যুক্ত। তাঁদের পিছনে মাওবাদীদের মদত ছিল। এ ছাড়াও পুলিশ আরও অভিযোগ করে, সোমারা রাজীব গান্ধী-হত্যার মতো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খুনের ছক কষছিলেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির নানা ধারার সঙ্গে কঠোর ইউএপিএ-তে মামলা করেছিল সোমাদের বিরুদ্ধে। ওই মামলার তদন্তভার পরে এনআইএ-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়।