দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। — ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টে আপাতত স্বস্তি পেলেন না দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। আবগারি মামলায় ইডির গ্রেফতারি বেআইনি, এমন দাবি করে শীর্ষ আদালতে মামলা করেছিলেন আপ প্রধান। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে কেজরীর আবেদনের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে রিপোর্ট তলব করল সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ২৭ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সে দিনই ইডিকে তাদের রিপোর্ট জমা করতে হবে।
সোমবার বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে কেজরীর মামলা। সওয়াল করার সময় কেজরীর পক্ষে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আদালতে বলেন, ‘‘আগামী শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আর্জি জানাচ্ছি। ইডির গ্রেফতারির ছিল নির্বাচনী প্রচার থেকে কেজরীওয়ালকে দূরে রাখার জন্য।’’ তবে বিচারপতি খান্নার বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়, এত তাড়াতাড়ি মামলার তারিখ দেওয়া সম্ভব নয়।
দিল্লির আবগারি মামলায় গত ২১ মার্চ কেজরীওয়ালকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। এর পরেই তাঁর গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন আপ প্রধান। গত ৯ এপ্রিল সেই মামলার শুনানিতে রায়দানের সময় দিল্লি হাই কোর্ট জানিয়েছিল, কেজরীর গ্রেফতারি বেআইনি ভাবে হয়নি। ইডি আদালতে জানিয়েছে, কেজরীর বিরুদ্ধে তাদের হাতে প্রমাণ রয়েছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে আবগারি মামলার ‘মূলচক্রী’ হিসাবে দেখিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পাশাপাশি, তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাই গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী যে আবেদন করেছেন, তা ‘ধোপে টিকছে না’ বলেই হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ।
গত বুধবার মামলার শুনানিতে ইডি আদালতে জানিয়েছিল, আবগারি মামলায় আপের কিছু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে চায় তারা। আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরীওয়ালের ভূমিকা কী ছিল, তা নিয়ে তদন্ত এখনও শেষ হয়নি বলে আদালতে জানিয়েছিল ইডি। পাশাপাশি, কেজরীওয়াল ইডির গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যে আবেদন করেছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ইডির আইনজীবী।
তিনি বলেন, ‘‘এই আবেদন এমন ভাবে করা হয়েছে, যেন এটি গ্রেফতার বাতিলের আবেদন নয়, জামিনের আবেদন।’’ কেজরীওয়ালের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির দাবি ছিল, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে যখন গ্রেফতার করা হয়, তখন আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি বলবৎ ছিল। তাই তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। গত মঙ্গলবার কেজরীর আবেদন খারিজ করে দেয় দিল্লি হাই কোর্ট।
দিল্লি হাই কোর্টে ধাক্কা খাওয়ার পরেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন আপ প্রধান। গত ১০ এপ্রিল কেজরীর পক্ষে আইনজীবী শীর্ষ আদালতে দ্রুত শুনানির আর্জি করেন। কিন্তু কিন্তু প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ তা খারিজ করে দেয়। সোমবার এই মামলার প্রাথমিক শুনানির সময় ইডির জবাব তলব করল সুপ্রিম কোর্ট।