প্রতীকী ছবি।
ঝাড়খণ্ডের পরে উত্তরপ্রদেশ। রাজ্যে রাজ্যে বিচারকেরা আক্রান্ত হচ্ছেন। বুধবার গাড়ি-হামলায় এক বিচারক প্রাণ হারিয়েছেন ধানবাদে। বৃহস্পতিবার আর এক বিচারক গাড়ি-হামলার মুখে পড়েন কৌশাম্বীর কোখরাজে। তিনি প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। পরপর এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দেশের আদালতগুলি ও বিচারকদের সুরক্ষা নিয়ে একটি মামলা শুরু করেছে।
এই মামলা যে ধানবাদের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক উত্তম আনন্দের মৃত্যুর সূত্রে, তা মামলার টাইটেলেই উল্লেখ করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা ও বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ ঝাড়খণ্ডের ডিজিপি ও মুখ্যসচিবকে সাত দিনের মধ্যে বিচারক আনন্দের মৃত্যু-তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলেছে। শীর্ষ আদালতের এই মামলা গোটা দেশের আদালত ও বিচারকদের সামগ্রিক সুরক্ষা নিয়ে। তাই শীর্ষ আদালত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য রাজ্য থেকেও বিচারকদের উপরে হামলার রিপোর্ট চাইবে বলে এ দিন ইঙ্গিত দিয়েছে। ঝাড়খণ্ড হাই কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে বিচারক আনন্দের মৃত্যু নিয়ে যে মামলা শুরু করেছে, তার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া স্বতন্ত্র ভাবে চলবে বলে স্পষ্ট জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
ধানবাদে বুধবার ভোরে ফাঁকা রাস্তার ধার ঘেঁষে হাঁটছিলেন বিচারক আনন্দ। সিসি-ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, একটি বড় অটোরিকশা রাস্তার মাঝখান থেকে মুখ ঘুরিয়ে এসে ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁকে ধাক্কা মেরে পালায়। পরে হাসপাতালে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশ বৃহস্পতিবার ওই অটোরিকশার চালক লাখন বর্মাকে গিরিডীহ্-তে ও তার হেল্পার রাহুল বর্মাকে ধানবাদে গ্রেফতার করেছে।
সেই দিনই ফতেপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক মহম্মদ আহমদ খানের উপরে গাড়ি-হামলা হয় কৌশাম্বীর কোখরাজে। প্রয়াগরাজ থেকে ফতেপুরে ফিরছিলেন তিনি। একটি ইনোভা গাড়ি তাঁর গাড়িটিতে পরের পর ধাক্কা মেরে তুবড়ে দেয়। তিনি গাড়ির যে দিকে বসেছিলেন, ইনোভাটি বারবার সে দিকেই ধাক্কা মেরেছে। বিচারক কোনও মতে রক্ষা পেলেও তাঁর দেহরক্ষী গুরুতর জখম হয়েছেন। পুলিশ ইনোভাটির চালককে গ্রেফতার করে জেরা শুরু করেছে।
বিচারক খান এফআইআরে উল্লেখ করেছেন, ২০২০-তে কৌশাম্বীরই বাসিন্দা এক যুবকের জামিনের আর্জি খারিজ করার পরে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। নিহত বিচারক আনন্দও সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের আমন সিংহ গ্যাং-এর দুই দুষ্কৃতীর জামিনের আর্জি খারিজ করেছিলেন। বিচারক হিসেবে বেশ কড়া বলেই পরিচিত ছিলেন তিনি। ঝরিয়ার বিধায়ক সঞ্জীব সিংহের ঘনিষ্ঠ সহযোগী রণজয় সিংহের হত্যা-সহ বেশ কয়েকটি ‘হাই প্রোফাইল’ মামলা চলছিল তাঁর এজলাসে।