Supreme Court

ব্যক্তিগত মতামতে রায় নয়! কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতির ‘যৌন সংযম’ মন্তব্যে বলল সুপ্রিম কোর্ট

কিশোর-কিশোরীদের যৌন চাহিদা নিয়ে উচ্চ আদালত যে মন্তব্য করেছে, তা ‘আপত্তিকর’ এবং সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১-এ বর্ণিত কিশোর-কিশোরীদের অধিকারের ‘পরিপন্থী’ বলেই জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:৪২
Share:

—ফাইল চিত্র।

যৌন নিগ্রহের মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। কিশোর-কিশোরীদের যৌন চাহিদা নিয়ে উচ্চ আদালত যে মন্তব্য করেছে, তা ‘আপত্তিকর’ এবং সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১-এ বর্ণিত কিশোর-কিশোরীদের অধিকারের ‘পরিপন্থী’ বলেই জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত। ডিভিশন বেঞ্চের স্পষ্ট বক্তব্য, ব্যক্তিগত মতামত বা দর্শনের উপর ভিত্তি করে কখনওই কিছু বলা উচিত নয় বিচারপতিদের।

Advertisement

গত অক্টোবর মাসে যৌন নিগ্রহের মামলায় হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের ‘যৌন আবেগ’ নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। দু’মিনিটের তৃপ্তির জন্য সেই নিয়ন্ত্রণ কখনওই যাতে না হারায়। সমাজের চোখে ‘ছোট’ হতে হয়, এমন কিছু যাতে না করে তারা। ওই বয়সের ছেলেদেরও উচিত, মেয়েদের যোগ্য মর্যাদা এবং প্রাপ্য সম্মানটুকু দেওয়া। উচ্চ আদালতের এই পর্যবেক্ষণে আপত্তি জানায় শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নির্দেশেই এ বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হয়। শুক্রবার বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং পঙ্কজ মিত্তলের বেঞ্চে সেই মামলারই শুনানি হয়েছে।

শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, মামলা শোনার পর ন্যায্য রায়ই দেওয়া উচিত বিচারপতিদের। সেই রায় যেন কখনওই বিচারপতির ব্যক্তিগত মতামত বা দর্শন দ্বারা প্রভাবিত না হয়। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, হাই কোর্টের রায়ের নথিতে নানা জায়গায় ‘আপত্তিকর এবং অনাবশ্যক’ বক্তব্য রয়েছে। যা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১-এ বর্ণিত কিশোর-কিশোরীদের অধিকারের ‘পরিপন্থী’। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে দায়ের হওয়া মামলায় নোটিসও দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার, অভিযোগকারিণী এবং অভিযুক্তকে।

Advertisement

গত ১৮ অক্টোবর একটি ধর্ষণের অভিযোগের মামলায় ২০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত যুবককে বেকসুর খালাসের রায় দেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেন। সেই কিশোর-কিশোরীদের সম্মতিক্রমে সহবাসে পকসো ধারা প্রয়োগ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল উচ্চ আদালত। অপ্রাপ্তবয়সে সহবাস করলে যে ধরনের আইনি জটিলতা তৈরি হয়, তা এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা দেওয়ার কথাও বলেছিলেন বিচারপতিরা। তাঁদের পর্যবেক্ষণ ছিল, যৌন উত্তেজনা তৈরি হওয়ার মূলে নিজেদের কার্যকলাপই। যে কারণে যৌন উত্তেজনা কখনওই ‘স্বাভাবিক এবং আদর্শ’ নয়। যৌন উত্তেজনামূলক কিছু কাজকর্ম বন্ধ করলেই সব স্বাভাবিক হবে। উচ্চ আদালতের এই পর্যবেক্ষণেই আপত্তি জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি, অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি ওকা। যদিও সেই বিষয়টি শীর্ষ আদালতের মামলার আওতায় পড়ছে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement