সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি পদে আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শাক্য সেনকে দ্রুত নিয়োগের সুপারিশ করে তাঁদের নাম দ্বিতীয় বার কেন্দ্রের কাছে ফেরত পাঠাল সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। সরকার একই সুপারিশ বার বার ফেরত পাঠাতে পারে না বলেও কলেজিয়াম স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে।
দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি পদে সমকামী আইনজীবী সৌরভ কৃপালকে দ্রুত নিয়োগ করতেও বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। বস্তুত, সুপারিশ করা নামগুলি নিয়ে কেন্দ্রের যুক্তি এবং তাদের পাল্টা যুক্তির যাবতীয় খতিয়ান আজ প্রকাশ করে দিয়েছে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জয় কিষণ কউল এবং বিচারপতি কে এম জোসেফের কলেজিয়াম, যা নজিরবিহীন। সরকারের হাঁড়ির খবর এ ভাবে সর্বোচ্চ আদালত প্রকাশ্যে এনে দেওয়ায় বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছল বলে আইনজীবীরা মনে করছেন।
অমিতেশের বাবা, সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ইউ সি বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন কমিশন গোধরায় ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছিল। মেঘালয় হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের খুড়তুতো ভাই অমিতেশ। শাক্য প্রাক্তন বিচারপতি এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামল সেনের পুত্র। ২০১৮ সালে কলকাতা হাই কোর্টের কলেজিয়াম অমিতেশ ও শাক্যের নাম বিচারপতি পদে সুপারিশ করার পরে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম তাতে সম্মতি দিয়েছিল। কিন্তু আইন মন্ত্রক দু’জনের নামই ফেরত পাঠায়। কলেজিয়াম ফের ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর অমিতেশের নাম সুপারিশ করে।
এ দিন সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, শাক্যের বিষয়ে আইন মন্ত্রক ২০২১-এর ২৭ সেপ্টেম্বর তাদের ইন্টেলিজেন্স বুরোর তথ্য পাঠালেও পরের মাসেই কলেজিয়াম ফের ওই আইনজীবীর নাম কেন্দ্রকে সুপারিশ করেছিল। কিন্তু কেন্দ্র গত বছরের ২৫ নভেম্বর সেই ফাইলও ফেরত পাঠায়। গত কাল কলেজিয়ামের বৈঠক বসে। বিচারপতিদের মতে, কেন্দ্র কোনও নতুন যুক্তি দেখাতে পারেনি। তাঁরা আপত্তি খতিয়ে দেখার পরেও সরকার বার বার নাম ফেরত পাঠাতে পারে না।
দিল্লি হাই কোর্টে সৌরভ কৃপালের নিয়োগ ঝুলে রয়েছে পাঁচ বছর ধরে। কলেজিয়ামের বিবৃতি বলছে, ২০১৮ এবং ২০২১ সালে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা র’-এর দেওয়া চিঠি দেখে মনে হয়, কৃপালকে নিয়ে আপত্তির কারণ দু’টি। প্রথমত, তাঁর সঙ্গী সুইৎজ়ারল্যান্ডের নাগরিক। দ্বিতীয়ত, তিনি নিজের যৌন পছন্দ গোপন করেননি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, সুইৎজ়ারল্যান্ড ‘বন্ধু দেশ’। তা ছাড়া, সাংবিধানিক পদাধিকারী অনেকেরই স্বামী বা স্ত্রী বিদেশের নাগরিক।