(বাঁ দিক থেকে) অজিত পওয়ার এবং শরদ পওয়ার। তখনও বিভাজন হয়নি এনসিপিতে। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের মুখে আবারও সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে এনসিপির অজিত পওয়ার গোষ্ঠী। অজিত গোষ্ঠীর অনলাইন প্রচারে কেন শরদ পওয়ারের নাম ব্যবহার হচ্ছে? বুধবার তা নিয়ে শীর্ষ আদালত ভর্ৎসনা করল অজিত গোষ্ঠীকে। বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূয়ানের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, উভয় গোষ্ঠীকেই নিজেদের সংগঠনের উপর নজর দিতে হবে। নির্বাচনী লড়াইয়ে অজিত গোষ্ঠী শরদের নামের উপর নির্ভর করতে পারে না। অজিত গোষ্ঠীর উদ্দেশে বুধবার সুপ্রিম কোর্ট বলে, “এখন শরদ গোষ্ঠীর সঙ্গে আপনাদের মতাদর্শগত পার্থক্য রয়েছে। তা হলে আপনারা নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন।”
এনসিপিতে বিভাজনের পর থেকে ‘ঘড়ি’ প্রতীক কোন শিবিরের হাতে থাকবে, তা নিয়ে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। সেটি এখনও বিচারাধীন। যদিও নির্বাচন কমিশন আপাতত ‘ঘড়ি’ প্রতীক অজিত গোষ্ঠীকে ব্যবহার করতে দিয়েছে। শরদ গোষ্ঠীকে ব্যবহার করতে হচ্ছে ‘তূর্য (শিঙা) বাদক ব্যক্তি’-র প্রতীক। কিন্তু শরদ গোষ্ঠীর অভিযোগ, এনসিপির নাম এবং ‘ঘড়ি’ প্রতীক ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে অজিত গোষ্ঠী। তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে শরদ গোষ্ঠী। মামলায় আগেই অজিত গোষ্ঠীকে ‘ঘড়ি’ প্রতীকের সঙ্গে সতর্কীকরণ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। প্রতীকের বিষয়টি যে এখনও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, সে বিষয়টি উল্লেখ থাকতে হবে সতর্কীকরণে।
বুধবার শরদ গোষ্ঠী আদালতে জানায়, ভোটারদের প্রভাবিত করতে শরদের ‘সুনাম’ কাজে লাগানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে অজিত গোষ্ঠী। যদিও আদালতের মতে, সাধারণ মানুষকে বোকা ভাবার কোনও কারণ নেই। শরদ গোষ্ঠী এবং অজিত গোষ্ঠীর মধ্যে ফারাক করতে তাঁরা জানেন। শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতির মতে, সাধারণ ভোটারেরাও এখন যথেষ্ট সচেতন। কোন ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তা ভোটারেরা ভালই বোঝেন। বিচারপতি কান্ত বলেন, “ভোটারেরা কোন পথে ভাববেন, তা আমরা স্থির করতে পারি না।” বিচারপতি ভূয়ানও বলেন, “ভোটারদের (মনে কী চলছে), তা খাটো করে দেখাও উচিত নয়।”
দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত সাধারণ মানুষ বুঝতে পারবে না বলে কেন মনে করছে শরদ গোষ্ঠী? বুধবার সেই প্রশ্নও করে শীর্ষ আদালত। তাতে শরদ গোষ্ঠীর আইনজীবী জানান, অজিত গোষ্ঠী দেখাতে চাইছে পওয়ার পরিবার একই রয়েছে। এই বলে তারা ভোট চাওয়ার চেষ্টা করছে। অজিত গোষ্ঠীর অনলাইন প্রচারের একটি ভিডিয়োও আদালতে দেখান তিনি। সেখানে শরদের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও অজিত গোষ্ঠীর আইনজীবীর বক্তব্য, সমাজমাধ্যমের যে পেজ থেকে ভিডিয়োটি দেখা যাচ্ছে, সেটি একটি পুরনো পেজ। যদিও সেই জবাবে সন্তুষ্ট হয়নি শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, নতুন হোক বা পুরনো— প্রতিটি ক্ষেত্রেই নির্দেশ মানতে হবে। মতাদর্শগত পার্থক্য থাকলে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। নিজস্ব রাজনৈতিক পরিচিতি তৈরি করতে হবে।